আত্নঘাতি বোমারুকে রুখে দেয় মুসলমান নিরাপত্তারক্ষী!

নভেম্বর ১৮, ২০১৫

11প্যারিস হামলার পরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে একজন মুসলমান নিরাপত্তারক্ষীর ‘বীরত্বের’ কথা ছড়িয়ে পড়ে। একজন মুসলমান নিরাপত্তারক্ষী আত্নঘাতি হামলাকারীকে স্টেডিয়ামের প্রবেশ-মুখে আটকে দিয়েছিল। সেই স্টেডিয়ামে জার্মানি এবং ফ্রান্সের মধ্যকার প্রীতি ফুটবল চলছিল। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওঁলাদ সে সময় স্টেডিয়ামের ভেতরে বসেই খেলা দেখছিলেন। আত্নঘাতি একজন হামলাকারী সেই খেলার টিকিট পেয়েছিলেন এবং খেলা শুরুর ১৫ মিনিট পরে তিনি স্টেডিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করেন। শরীরে বোমা বাঁধা অবস্থায় সেই হামলাকারীকে আগেই চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন মুসলমান নিরাপত্তারক্ষী যুহেইর। আত্নঘাতি বোমা হামলাকারীকে আটকে দেবার পর সেখানেই বিস্ফোরণটি ঘটে। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান নিরাপত্তা রক্ষী যুহেইর। যদি সেই হামলাকারী স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারতো তাহালে আরো অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটতো। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে যুহেইরের বীরত্বের কথা এভাবেই ছড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু বাস্তবে একথা সত্য নয়। হামলার সময় স্টেডিয়ামের বাইরে কী হচ্ছিল তার কিছু ঘটনা নিয়ে মার্কিন সংবাদপত্র ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল। সেই প্রতিবেদনে যুহেইর নামের একজন নিরাপত্তারক্ষীর বক্তব্য ব্যবহার করা হয়েছিল।সেই নিরাপত্তারক্ষী যেভাবে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন পুলিশও সেটি নিশ্চিত করেছে। ওয়ালস্ট্রিটের সেই সাংবাদিক বিবিসিকে জানিয়েছেন, তার প্রতিবেদনে ঘটনা সম্পর্ক যুহেইর বক্তব্য ব্যবহার করা হলেও আত্নঘাতি বোমারুকে তিনি থামান নি। যুহেইর তখন স্টেডিয়ামের অন্যত্র দায়িত্ব পালন করছিলেন। আত্নঘাতি বোমারুকে ফিরিয়ে দেবার ঘটনাটি যুহেইর তার অন্য সহকর্মীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলেন। তিনি সাংবাদিকের কাছে ঘটনার বর্ণনা করেছেন মাত্র। যদিও যুহেইর নামটি মধ্যপ্রাচ্যের, কিন্তু তার ধর্মীয় পরিচয় সম্পর্কে ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে যুহেইর নামটি আট হাজারবার উল্লেখ করা হয়েছে। প্যারিস হামলা সংক্রান্ত যতগুলো টুইট বার্তা এসেছে, যুহেইর নামটি তার মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয়। যুহেইরের বীরত্বের কথা উল্লেখ করে অনেকে মন্তব্য করেছেন মুসলমানরা সন্ত্রাসী নয়। এনিয়ে গুজব আরো জোরালো হয় যখন ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের সৌদি আরব সংবাদদাতা আল ওমরানের একটি টুইট বার্তাকে কেন্দ্র করে। আল ওমরানও লিখেছেন নিরাপত্তারক্ষী যুহেইর আত্নঘাতি হামলাকারীকে আটকে দিয়েছেন। কিন্তু এর দুই ঘন্টা পরেই ওমরান তার ভুল বুঝতে পারেন। দ্বিতীয় আরেকটি টুইটে তিনি উল্লেখ করেন নিরাপত্তারক্ষী যুহেইর অন্য জায়গায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু ওমরানের প্রথম টুইট বার্তাটি ৩০০ বার শেয়ার হলেও দ্বিতীয় টুইট বার্তাটি মাত্র কয়েকবার শেয়ার হয়েছে। সেজন্য প্রথম টুইট বার্তাটি সবার মাঝে ছড়িয়ে গেছে। যুহেইরের বীরত্ব সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও আরেকজন মুসলমান যে দুজন নারীর জীবন বাঁচিয়েছেন, সে বিষয়টি আলোচনায় আসেনি। যে রেস্তোরাগুলোতে হামলা হয়েছিল তার একটিতে কাজ করতেন মুসলমান কর্মী সাফের।যখন সেখানে গুলি চালানো হয়, তখন আহত দুজন নারীকে সাফের টেনে সেই রেস্তোরার বেজমেন্টে নিয়ে যান। –

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.