বেকার যুবকদের ভাগ্য বদলে বিশেষ ঋণ

নভেম্বর ১২, ২০১৫

01ঢাকা: বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ স্কিম চালু করা হচ্ছে। কার্যত সরকার গঠনের আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সচেষ্ট থাকার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন এ স্কিম তারই ফলশ্রুতি। আসছে ডিসেম্বরেই সেই ঘোষণা বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এ স্কিমের আওতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুপ্রেরণায় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ৫ শতাংশ সুদে পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচি চালু হবে।

তাই এ উদ্যোগ বেকারত্ব হ্রাসের পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে দুগ্ধ উৎপাদনে বাংলাদেশ হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রস্তাবনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ৭টি তফসিলি ব্যাংকসহ ১২টি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিশেষ এই ঋণ সুবিধা দেবে বেকারদের। যা তিন বছরের মধ্যে ৫ শতাংশ সুদসহ শোধ করার সুবিধা পাবেন বেকার যুবকরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, বিশেষ ঋণ সুবিধা দিতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক।

এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকেও বিশেষ এই স্কিম সুবিধা নেওয়া যাবে বলে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।  বাংলাদেশ ব্যাংক মহাব্যবস্থাপক প্রভাষ চন্দ্র মল্লিক স্বাক্ষরিত নির্দেশনার কপি বাংলানিউজের কাছেও রয়েছে।

দুধ উৎপাদন ও কৃত্রিম প্রজনন খাতে ৫ বছর পর্যন্ত নবায়ন/ আবর্তনযোগ্য ২০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ১৩ ডিসেম্বর (সম্ভাব্য) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেকার যুবকদের বিশেষ এই স্কিম সুবিধা উদ্বোধন করবেন।

এ লক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি প্রজ্ঞাপন পাঠানো হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নবায়ন/আবর্তনযোগ্য এ স্কিমের মেয়াদ হবে ৫ বছর।

তবে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে গ্রহণের তারিখ হতে ৩ বছর। এই ৩ বছরের মধ্যে আসল এবং প্রতি বছর শেষে সুদ পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন জামানত প্রয়োজন হবে না।

ঋণ প্রদানকারী ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংক রেটে (বর্তমান ৫ শতাংশ, যা পরিবর্তনশীল) পুন:অর্থায়ন সুবিধা পাবে। গ্রহক পর্যায়ে সুদের হার হবে ৫ শতাংশ।

ব্যাংক ও বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে সুদ ক্ষতি/ভর্তুকি বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ দাবি করতে পারবে।

ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতা:
(ক) গাভী ও বাছুর ক্রয় এবং লালন-পালন, দুগ্ধ উৎপাদন এবং কৃত্রিম প্রজননে জড়িত প্রকৃত খামারিরা একক ও যৌথ খাতে ঋণ নিতে পারবেন।

(খ) ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো বিদ্যমান বিধিবিধান অনুসরণ করে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের আলোকে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে বিবেচনা করবে এবং প্রতিটি ঋণের জন্য পৃথক হিসাব সংরক্ষণ করবে।

(গ) ঋণের পরিমাণ এবং পরিশোধসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো নিজেরাই এবং প্রয়োজনবোধে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

মৎস ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানান, ডিসেম্বরে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানে বিশেষ সুবিধা চালু করা হচ্ছে। এতে মাত্র ৫ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হবে।

এ ঋণ নিয়ে বেকার যুবকরা দুগ্ধ খামারের মাধ্যমে দুধ উৎপাদন করে দেশকে দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ করবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অজয় কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি গবাদিপশুর প্রজনন বাড়াতে চাই।

দেশের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বেকারত্বও ঘুচবে। এজন্য অর্থমন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে অন্যান্য ব্যাংক বিশেষ স্কিম কর্মসূচি ডিসেম্বরেই শুরু করবে।

তিনি বলেন, ঋণ প্রদান ও আদায়ে সার্বিক সহযোগিতা করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো। আমাদের কর্মকর্তারা শুধু ঋণ বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না সেটা তদারকি করবে।

অর্থাৎ ঋণ নিয়ে সেই খামারি গাভী কিনলো কি না তা দেখবে স্থানীয় কর্মকর্তারা। এর বাইরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কোন করণীয় নেই।

তবে ঋণ প্রদানে আমাদের তরফ থেকে শর্ত থাকবে। যারা ঋণ নিয়ে গাভী কিনবে তাদের অবশ্যই কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।

নভেম্বর ১২, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.