উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জেনে রাখা উচিত সবার

সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৫

126রক্তচাপের মাত্রার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে থাকে। রক্তচাপের মাত্রা আপনার সুস্থতার নির্ণায়ক। রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলে আপনি অনেক রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ অর্থাৎ হাই ব্লাডপ্রেসার এবং নিম্ন রক্তচাপ অর্থাৎ লো ব্লাডপ্রেসার কোনোটিই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ মারাত্মক ক্ষতিকর আপনার স্বাস্থ্যের জন্য। উচ্চ রক্তচাপের কারণেই কার্ডিওভ্যস্কুলার সমস্যা, হৃদপিণ্ডের সমস্যা এবং মস্তিস্কের নানা মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয় যার কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়াও নিম্ন রক্তচাপের দরুনও অনেক মারাত্মক শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই রক্তচাপ সম্পর্কে জেনে রাখা এবং রক্তচাপ নিয়মিত মেপে রাখা খুবই জরুরী বিশেষ করে যদি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগে থাকেন। আজকে দেহের সুস্থতার জন্য জরুরী এই উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জেনে নিন চিকিৎসকের পরামর্শে।

রক্তচাপ পরিমাপ

যে কোনো ক্লিনিক, হাসপাতাল, এমনকি সাধারণ ফার্মেসীতেও অনেক সময় রক্তচাপ মাপার ব্যবস্থা থাকে। রক্তচাপ মাপার মেশিন খুবই সহজলভ্য। ডঃ মনোয়ারুল হক বলেন, ‘আপনি চাইলে ঘরে নিজেই মেপে নিতে পারেন যদি রক্তচাপ মেপে নেয়ার মেশিনটি কিনে নেন। এটি খুবই সহজ একটি বিষয়’। অনেকেই হয়তো রক্তচাপ মাপার নিয়ম জানেন না। রক্তচাপ যন্ত্রে দুইটি সংখ্যার পরিমাপ করা হয়। প্রথম হার্টবিট ও শেষ হার্টবিটের পরিমাপ। একজন পূর্ণ বয়স্ক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের এই দুটি থাকে ১২০/৮০। যদি এর চাইতে বেশি থাকে তাহলে তা উচ্চ রক্তচাপ এবং কম থাকলে নিম্ন রক্তচাপ ধরা হয়ে থাকে।

সুস্থ থাকাকালীন সময়ে: ১২০/৮০
প্রি-হাইপারটেনশন: ১২০-১৩৯/৮০-৮৯
হাইপারটেনশন প্রথম ধাপ: ১৪০-১৫৯/৯০-৯৯
হাইপারটেনশন দ্বিতীয় ধাপ: ১৬০- উপরে/১০০ থেকে উপরে

সাধারণের পরের পরিমাপগুলো ধরা পড়লে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

সতর্কতা

অনেকেই হয়তো জানেন না তিনি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন। এর কারণ হচ্ছে অনেকের মধ্যেই উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ডঃ মনোয়ারুল বলেন, প্রায় প্রতি ৩ জনে ১ জন কখনো বুঝতে পারেন না যে তিনি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন। তাই এক্ষেত্রে অনেক সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। লক্ষণ প্রকাশ না পেলেও নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করে নেয়া ভালো।

উচ্চ রক্তচাপে ভোগার কারণ

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সাধারণ কোনো সমস্যা নয়। একটু অসাবধানতাতেই মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে এই সমস্যা। কিন্তু ঠিক কোন কারণে এই সমস্যায় ভোগেন মানুষ তা সম্পর্কে ডঃ মনোয়ারুল জানান, ‘অতিরিক্ত ওজন, অতিরিক্ত ধূমপান করা, খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া বা সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া, একেবারেই পরিশ্রম না করা, পরিবারের অন্য কারো এই সমস্যা থাকলে, সব সময় মানসিক চাপে থাকা, অন্যান্য কিডনি বা থাইরয়েড সমস্যা থাকলে এবং বয়সের কারণে এই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই’। সুতরাং যে বিষয়গুলো আপনার নিজের হাতে রয়েছে সেগুলো থেকে নিজেকে বিরত রেখে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন অনায়াসেই।

যা করা উচিত

যদি কারো উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে তা অবশ্যই কমানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করে যেতে হবে। নতুবা এই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যার কারণে রক্তনালী ধীরে ধীরে নমনীয়তা হারাবে এবং শক্ত হয়ে যেতে থাকবে। এতে করে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি বেড়ে যায়।

  • – নিয়মিত ঔষধ সেবন করা উচিত ডাক্তারের পরামর্শে।
  • – নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করা জরুরী।
  • – যতো দ্রুত সম্ভব দেহের বাড়তি মেদ ঝড়িয়ে ফেলা উচিত।
  • – খাবারের ব্যাপারে সতর্ক থাকা খুবই জরুরী। সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার পরিমিত ও লবণ কম খাওয়া, কোলেস্টেরলের সমস্যা হয় এমন সব খাবার বাদ দিয়ে দেয়া প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শে।
  • – নিয়মিত চেকআপের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার ব্যাপারে অবহেলা করা চলবে না একেবারেই।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.