শিক্ষকরা লাগাতার আন্দোলন যাচ্ছে, বিঘ্ন ঘটতে পারে ভর্তি পরীক্ষায়

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৫

shiঢাকা জার্নাল : স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে আন্দোলন করছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

সরকার ইতিমধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে প্রধান করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট বেতন বৈষম্য দূরীকরণে কমিটি করেছে। কিন্তু এ কমিটি থেকে অর্থমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নির্ভর করার মতো অন্য কাউকে প্রধান করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। অন্যথায় ঈদের পরে লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত এবং বিশ্ববিদ্যালগুলোতে প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষাও বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেন তারা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার ইতিমধ্যে ৭ সদস্য বিশিষ্ট বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত কেবিনেট কমিটি করেছে, যেখানে মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে প্রধান করা হয়েছে। অথচ অর্থমন্ত্রী গত ৮ তারিখে সংবাদ মাধ্যমে শিক্ষকদের সম্পর্কে অসংলগ্ন ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান করেন এবং গত ১০ তারিখ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আবার ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ে নেতিবাচক বক্তব্য রেখেছেন এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য তুলে ধরেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে তার এ ধরনের আচরণের কারণে তিনি ইতিমধ্যেই সব স্তরের শিক্ষকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন। গণমাধ্যমে মাননীয় মন্ত্রীর কথায় মনে হয়েছে, তিনি জনগণের প্রতিনিধি নন, আমলাদের প্রতিনিধি। সুতরাং তার কাছ থেকে শিক্ষকরা সুবিচার পাবেন বলে আমরা মনে করি না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এই কমিটিতে জনবরেণ্য ও নির্ভর করার মতো জনপ্রতিনিধি আছেন, যারা দেশকে অগ্রসর করে নেওয়ার চিন্তা-চেতনা ধারণ করেন। এমতাবস্থায় আমরা অর্থমন্ত্রীর স্থলে একজন সর্বজন গ্রহণযোগ্য জনপ্রতিনিধিকে কমিটির প্রধান করে অনতিবিলম্বে আলাপ-আলোচনা শুরু করতে অনুরোধ জানাই। শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিসমূহ পূরণের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে ঈদের পর লাগাতার কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে- এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত এবং বিশ্ববিদ্যালগুলোতে প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষাও বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

এদিকে স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব না আসায় তৃতীয় দিনের মতো পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন ৩৭ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার সকালে এ কর্মবিরতি শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে। এ ছাড়া বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত নির্ধারিত স্থানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে কর্মবিরতি পালন করে। তবে পরীক্ষা কর্মবিরতির আওতামুক্ত ছিল।

ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এসব তথ্য জানান।

ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের মূল দাবি হলো- স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রণয়ন। সেক্ষেত্রে বেতন বৈষম্য নিরসনে যে কমিটি হয়েছে তাতে অর্থমন্ত্রীকে প্রধান রাখা চলবে না। তাকে দিয়ে নিরপেক্ষ কোনো সমাধান আসতে পারে না।

মহাসচিব ড. মাকসুদ অভিযোগ করেন, অর্থমন্ত্রী নিজেকে শিক্ষকদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। তাকে দিয়ে শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানে কোনো কমিটি হতে পারে না। আমরা তার সঙ্গে আলোচনায় বসব না।

জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক পদ সৃষ্টির বিষয়ে তিনি বলেন, আগে স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রণয়নের বিষয়ে কথা বলতে হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি পূরণে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক।

১৮সেপ্টেম্বর  ২০১৫

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.