কেমন আছেন সেই জজ মিয়া

আগস্ট ২১, ২০১৫

40কেমন আছেন সেই জজ মিয়া
ঢাকা জার্নাল প্রতিবেদক :২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার শিকার সেই জজ মিয়ার খোঁজ নেয়নি কেউ। একমাত্র মাথা গোঁজার জায়গাটুকু হারিয়ে সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের বীরকোট গ্রামের টেন্ডল বাড়ির জালাল আহমদ জজ মিয়া দীর্ঘ সময় কারাভোগের পর বর্তমানে সর্বস্বান্ত হয়ে ঢাকার শনির আখড়ায় এক বস্তিতে বসবাস করছেন। জজ মিয়া বাঁচার তাগিদে মা আর ছোট বোনকে নিয়ে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে চাকরি করছিলেন। কিন্তু স্বল্প বেতনে তার পরিবার পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করা কষ্টসাধ্য হওয়ায় চলতি মাসে চাকরিটি ছেড়ে দিয়ে বর্তমানে অন্যত্র চাকরির আশায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে নাটক নির্মাতা তৎকালিন এএসপি ও মামলার তদন্তকারী অফিসার,সিআইডি কর্মকর্তা রুহুল আমিন এখন সংশ্লিষ্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যাকা- মামলার আসামি। বর্তমানে চাকুরীচ্যুত এবং জামিনে রয়েছেন তিনি। তবে মামলায় তার ভবিষ্যত কি হবে, এই আতঙ্কে রয়েছেন তিনি।
জানা যায়, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হওয়ার প্রায় ৯ মাস পর ২০০৫ সালের ৯ই জুন গ্রেপ্তার করা হয় জজ মিয়াকে। পরে থানা থেকে তাকে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তকারী অফিসার রুহুল আমিনের অপতৎপরতায় কয়েক দিনের মাথায় জজ মিয়া ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জড়িত বলে ১৬৪ ধারা আদালতে স্বীকারোক্তির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। নানা নাটকীয়তার পর ২০০৮ সালের ১১ জুন আদালতে সিআইডির দাখিল করা চার্জশিটে ২২ জনকে আসামি করা হলে অব্যাহতি দেয়া হয় জজ মিয়াকে। তখন জজ মিয়া মুক্তির বিষয়টি আটকে যায় সূত্রাপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা (১০৮, তাং ২৭-১২-৯৮) মামলায়। এ মামলায় কোনদিন জজ মিয়াকে আদালতে হাজির না করা হলেও ২০০৫ সালের ২ নভেম্বর তাকে ৭ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত। দীর্ঘ তদন্তের পর সিআইডির পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল জজ মিয়া ওই হামলায় জড়িত। যদিও তখনই মামলা তদন্তে অস্বচ্ছতা ও জজমিয়া জড়িত থাকার বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহলে।
এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তদন্তের মূল রহস্য বেরিয় আসে। মামলা ভিন্ন খাতে নেয়ায় সিআইডির ৩ তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি আবদুর রশিদ, এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান ও বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সরকার মামলা দায়ের করে। সেই সময়ে গ্রেনেড হামলা মামলায় ওই ৩ জনকে আসামি করে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের সঙ্গে অভিযুক্ত করা হয় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে জজ মিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দিলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তদন্ত শেষে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয় জজ মিয়াকে। দীর্ঘ ৪ বছর ২ মাস ২৫ দিন নাটকের রোষানলে পড়ে কারাভোগের পর ২০০৯ সালের ২০ জুলাই কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান জজ মিয়া।কেমন আছেন সেই জজ মিয়া
ঢাকা জার্নাল ,২১ আগস্ট ২0১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.