‘৫০ লাখ পাঠককে বঞ্চিত করছে আনন্দবাজার পত্রিকা’
আগস্ট ১৪, ২০১৫ ভারতের গুরুত্বপুর্ণ পত্রিকা আনন্দবাজার পাঠকদের বঞ্চিত করছেন। বলতে গেলে ঠকাচ্ছেন। এমনটিই সরাসরি বললেন বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত বিশ্ব্যাপী আলোচিত লেখক তসলিমা নাসরিন। বরাবরই কড়া সত্যি প্রকাশ করেছেন এই লেখিক। সত্য প্রকাশের জন্য মৌলবাদীদের শত্রুতে পরিণত হয়ে অবশেষে বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত হয়েছেন তিনি।
এবার ভারতের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করে বলেছেন ৫০ লাখ পাঠককে বঞ্চিত করেছে আনন্দ বাজার।
তসলিমা নাসরিন আনন্দবাজার নিয়ে তার ফেসবুকে সমালোচনা করেন। তা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
“১৪ আগস্ট নির্বাসিত মুক্তি পাচ্ছে কলকাতায়। আনন্দবাজার কিছুই লিখছে না এ নিয়ে। ছবিটা বানানোর আগে, যখন কেবল পরিকল্পনা চলছিল, তখন বড় বড় স্টোরি করেছিল আনন্দবাজার। ছবিটা বানানো শেষ হলো, আনন্দবাজার একটি বাক্য লেখেনি। ছবিটা শ্র্রেষ্ঠ বাংলা ছবি হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেলো, আনন্দবাজার একটি শব্দ লেখেনি এ নিয়ে। এখন ছবিটা মুক্তি পাচ্ছে খোদ কলকাতায়, আনন্দবাজার একটি অক্ষর লেখেনি এ বিষয়ে।
বাক স্বাধীনতার পক্ষে আনন্দবাজারে চমৎকার সম্পাদকীয় লেখা হয়। কিন্তু বাক স্বাধীনতার পক্ষের একটি বাংলা ছবি থেকে আনন্দবাজার মুখ ফিরিয়ে রইলো। ছবিটি তার জীবনের ছায়া অবলম্বনে, যাকে আনন্দবাজার দু’দুবার আনন্দ পুরস্কার দিয়েছে। ছবিটি কৌশিক গাঙ্গুলি প্রযোজিত, যে এখনাকার বাংলা ছবি বানিয়েদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো। আনন্দবাজার বাংলা এবং বাঙালি নিয়ে কম তো করে না এমনিতে। সৌরভ গাঙ্গুলিকে বঙ্গসন্তান বলেই তো ডেকেছে, ঝুম্পা লাহিড়ী আর অরুন্ধতী রায়কেও্ বাঙালি বলে চালবার প্রাণপণ চেষ্টা করেছে।
এই আনন্দবাজার একটিবার ফিরেও তাকালো না শ্রেষ্ঠ বাংলা ছবিটির দিকে! আমাকে বয়কট করেছে জানি, তাই বলে আমি ছিটেফোঁটা আছি যে ছবিটিতে, সেটিকেও বয়কট করতে হবে? জানি আনন্দবাজার আজ কোলে তুলে নিতে পারে, কাল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে পারে। আমি মোটেও আনন্দবাজার নিয়ে ভাবছি না। আমি ভাবছি ৫০ লক্ষ পাঠককে নিয়ে, যারা প্রতি সকালে আনন্দবাজার পড়ে। তাদের কত খবর থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তারা আজ জানে না নির্বাসিত’র কথা, কারণ আনন্দবাজার তাদের জানায়নি। আনন্দবাজার যারা পড়ছে, তারা কিন্তু পিছিয়ে পড়ছে।”
ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ১৪, ২০১৫।