অভিজিৎ হত্যায় সরকারের প্রচ্ছন্ন সমর্থনের অভিযোগ অজয় রায়ের

জুলাই ৩, ২০১৫

Ajoy Royঢাকা জার্নাল : প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যে লেখক ড. অভিজিৎ রায়কে নাস্তিক বলে আখ্যায়িত করার অভিযোগে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিজিতের বাবা বিজ্ঞানী ড. অজয় রায়। জয়ের এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ব্লগার ও লেখক হত্যায় সরকারের প্রচ্ছন্ন সমর্থনের ইঙ্গিত প্রকাশিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ অভিযোগ করেন।

আক্রান্ত মুক্তবাক: নির্বাক রাষ্ট্র’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. অজয় রায় বলেন, ব্লগার হত্যার বিরুদ্ধে সরকারের কোনো প্রতিবাদ বা বক্তব্য প্রকাশ্যে পাওয়া যায়নি। তবে কি ধরেই নিতে হবে ব্লগার হত্যায় সরকারের প্রচ্ছন্ন সমর্থন আছে? তিনি মুক্তচিন্তার পক্ষে মুক্তমনা মানুষের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

প্রগতি লেখক সংঘের কার্যকরি সভাপতি কবি গোলাম কিবরিয়া পিনুর সভাপতিত্বে সংগঠনের পক্ষে সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক নজরুল কবীর।

প্রতিপাদ্যের ওপর নির্ধারিত আলোচক ছিলেন, অর্থনীতিবিদ ও লেখক অধ্যাপক এম এম আকাশ, নাট্যকার মামুনুর রশীদ, অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক ও ডা. লেলিন চৌধুরী।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও ব্লগার বাকি বিল্লাহ, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক আকরামুল হক, জীবনানন্দ জয়ন্ত প্রমুখ।

বক্তরা বলেন, উপর্যুপরি লেখক হত্যা ও হত্যার হুমকির পরও রাষ্ট্রের নির্লিপ্ততা দুঃখজনক। এ পরিস্থিতিতে উগ্রসাম্প্রদায়িক, জঙ্গি ও ফ্যাসিস্ট শক্তির বিরুদ্ধে অব্যাহত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মুক্তচিন্তার পথ বিনির্মাণ করতে হবে। একইসঙ্গে ধর্মের নামে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের রাষ্ট্র এবং পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধেও সংগ্রাম পরিচালনা করতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পদদলিত করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সাম্পদ্রায়িক চরিত্রে আবির্ভুত হয়েছে মন্তব্য করে বক্তারা বলেন রাষ্ট্রের নিরবতা এবং অনেকাংশে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় এদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদ বিস্তার লাভ করেছে। আজকে যুদ্ধাপরাধের বিচার চাওয়ার মুল্য দিতে হচ্ছে এ দেশের প্রগতিশীর লেখক, চিন্তাবিদ, আন্দোলনের কর্মী ও সংগঠকদের। উপর্যুপরি তাদের রক্ত দিতে হচ্ছে।

বক্তব্যে নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, এদেশে মুক্তবাকতো দুরের কথা, একটা সিভিল ভয়েসও এই মুহূর্তে নেই। যারা মুক্তচিন্তার ধারক, কর্মী ও সংগঠক তারাই মূলত সিভিল ভয়েস। এ রাষ্ট্র চিন্তক, প্রগতিশীল আন্দোলনের কর্মী ও মুক্তমনাদের নিরাপত্তা দিতে অক্ষম অথচ চোর-ডাকাত-বাটপারদের নিরাপত্তা দেয়।

এম এম আকাশ বলেন, মুক্তচিন্তার পক্ষে আমাদের লড়াই করতে হবে এবং এ লড়াইয়ে আমাদের জিততে হবে। মৌলাবাদের বিরুদ্ধে সংগামের পাশাপাশি রাষ্ট্রের দুর্বলতা নিয়েও কথা বলতে হবে। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।

ঢাকা জার্নাল, জুলাই ৩, ২০১৫।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.