আদিবাসী নারীর সমঅধিকার সংরক্ষণে যুগোপযোগী আইন করার পরামর্শ

ঢাকা জার্নাল : আদিবাসী নারীর সমঅধিকার সংরক্ষণে প্রথাগত আইন যুগোপযোগী করার পরামর্শ দিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত এক সভায় এই পরামর্শ দেওয়া হয়।

‘প্রথাগত আইন ও বিচার ব্যবস্থায় আদিবাসী পাহাড়ি নারীর অবস্থান’ শীর্ষক এই পরামর্শ সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএস -এর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর। পরামর্শ সভায় গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা। পরামর্শ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোমাং সার্কেল চিফ রাজা উ চ প্র“, চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায় এবং মং সার্কেল চিফ রাজা সাচিং প্র“ চৌধুরী, ব্রেড ফর দা ওর্য়াল্ড ও প্রটেস্টেন্ট এজেনিস ডিকোনিয়া এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট- সাউথ এশিয়ান ডেস্কে দায়িত্বরত এডা কারলেস।

সভায় প্যানেল আলোচক ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নিরুপা দেওয়ান, তথ্য কমিশনার ড. সাদেকা হালিম এবং রিব-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মেঘনা গুহ ঠাকুরতা। আরও বক্তব্য রাখেন শেফালিকা ত্রিপুরা, ডনাই প্র“ নেলী, ঢাকা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শীলু রায়, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের তন্দ্রা চাকমা, অর্থনীতিবিদ হান্নানা বেগম।

অনুষ্ঠানে চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায় বলেন- ‘আদিবাসী প্রথাগত আইন ধর্মনির্ভর নয়। আদিবাসী নারীর সমঅধিকার সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রথাগত আইন বিশ্লেষণ করে যুগোপযোগী এবং প্রধান নীতিমালগুলো লিপিবদ্ধ করতে হবে। হেডম্যান ও কারবারীদের জেন্ডার সংবেদনশীল করতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।

বোমাং সার্কেল চিফ রাজা উ চ প্র“ বলেন, সম্পত্তিতে আদিবাসী পাহাড়ী নারীর উত্তরাধিকারী নিশ্চিত করতে হবে। লৈঙ্গিক শ্রমবিভাজন কমিয়ে আনতে হবে।

মং সার্কেল চিফ রাজা সাচিং প্র“ চৌধুরী বলেন, আদিবাসী পাহাড়ী সমাজে বিবাহ রেজিষ্ট্রেশনের ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। সামাজিক বিচারের শুনানীতে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে এবং হেডম্যান ও কারবারী পদে নারীদের নিয়োগ দেওয়া হবে।

সভায় বক্তারা বলেন, নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক ও অমর্যাদাকর প্রথা ও রীতিনীতিগুলো বর্জন করতে হবে। আদিবাসী পুরুষের বহু বিবাহ বন্ধ করার জন্য প্রথাগত আইনে বহু বিবাহ নিষিদ্ধ, প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতার ভিত্তিতে নারীকে নিয়োগে অগ্রাধিকার এবং প্রথাগত সামাজিক আদালতের রায়ের যথাযথ প্রক্রিয়ায় রেকর্ড সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি আদিবাসী নারীদের উপর সহিংসতা বন্ধের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান বক্তারা।

ঢাকা জার্নাল, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৪।