ঢাকা চিড়িয়াখানায় বাজেট ঘাটতি: খাদ্য সংগ্রহে অনিশ্চয়তা

মার্চ ১০, ২০১৩

2012-04-20-20-11-08-4f91c2dc5a9d9-untitled-25তরিকুল ইসলাম: ঢাকা চিড়িয়াখানায় প্রায় আড়াই হাজার প্রাণির জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দে টান পড়েছে। ফলে এসব প্রাণির খাদ্য সংগ্রহে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে চিড়িয়াখানা সূত্রে জানাগেছে।

সূত্র জানায়, গত চার বছর ধরে প্রাণি খাদ্য সংগ্রহে বাজেট বৃদ্ধি না করা, নতুন প্রাণি সংগ্রহ, খাবারের দাম বৃদ্ধি, জলহস্তি, কুমির, সাপ, রেসার্স বানর, ময়ুর, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহের বংশ বৃদ্ধির কারণে বছরের চারমাস বাকি থাকতেই খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চার মাসের খাদ্য সংগ্রহে এখন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের প্রয়োজন অতিরিক্ত ২ কোটি টাকা।

চিড়িয়াখানায় খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার মোহাম্মদ আজম আলী জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রাণিদের খাবারের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫ কোটি টাকা। এবিষয়ে বারবার জানানো হলেও কর্তপক্ষ বাজেট বৃদ্ধি করেনি। ফলে চিড়িখায়ানার প্রাণিদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। যদি না তারা তাদের পাওনা সঠিক সময়ে পান। গত মাসে তারা তাদের খাদ্যের দাম পেলেও আগামী চারমাসে বিল না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, খাদ্যের জন্য কর্তৃপক্ষের বাজেটের বাকি রয়েছে ৪৩ লাখ টাকা। এ টাকা দিয়ে আগামী চারমাস চালানো যাবে না।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ডা. মোছাদ্দেক হোসেন জানান, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বিষয়টি তাকে অবহিত করেছে। তিনি ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। অধিদফতরের মাধ্যমে এটি প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ে জানাবেন। (আরএডিপির) মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়ার জন্য। চিড়িয়াখানার জন্য নির্দিষ্ট এটি কোডে ব্যয় হওয়ার এই খাতের ব্যয় সংকুলনে সমস্যা হবে। তার উপরে অর্থমন্ত্রণালয়েরও বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

তিনি আরো বলেন, প্রাণিদের বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন।

অপর একজন ঠিকাদার মো. আজাদউল্লাহ আজম জানান, চিড়িয়াখানার জন্য প্রতিমাসে প্রায় ৫০ লাখ প্রয়োজন। ঠিকাদাররা প্রয়োজনে এক মাসের টাকা বকেয়া রাখতে পারলেও ৩-৪ মাসের টাকা বকেয়া রাখা সম্ভব হবে না। একারণে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জরুরী ভিত্তিতে বাজেট না বাড়ালে সঠিক সময়ে খাদ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। ফলে চিড়িয়াখানার প্রায় আড়াই হাজার প্রাণির জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।

ঢাকা চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডা. মাকসুদুল হাসান হাওলাদার জানান, বর্তমানে চিড়িয়াখানার প্রাণি ও পাখির সংখ্যা ১৪৮২টি এবং এ্যাকুরিয়ামে মাছ রয়েছে প্রায় এক হাজারটি। এসব প্রাণির খাবারের জন্য মাসে ৪৮-৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন। তিনি ঠিকাদারদের ফেব্রুয়ারি মাসের খাবারের টাকা পরিশোধ করেছেন। এখন এখাতে রয়েছে ৪৩ লাখ টাকা। বছরের শেষ তিন মাসের খাবার সংগ্রহ করা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মোট বরাদ্দ থেকে গত বছরের ঠিকাদারদের পাওনা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এতে বছরের শেষ সময়ে খাবারের টাকায় টান পড়েছে। এ জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয় খাবার কেনার জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন। তা না হলে চিড়িয়াখানার নির্ধারিত ৯টি প্রতিষ্ঠান খাদ্য সরবরাহ করবে কীনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ঢাকা জার্নাল,  মার্চ ৯, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.