২০ দিনের জন্য মাঠে নামতে পারে সেনা বাহিনী

নভেম্বর ২৯, ২০১৩
armi_31790ঢাকা জার্নাল: আগামী ৫ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদ্যমান  সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২০ দিনের জন্য মাঠে নামতে পারে সেনা বাহিনী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ভোটের পর আরো অন্তত দুই দিন পর্যন্ত সেনাসদস্যরা মাঠে থাকবেন বলেও অনলাইন বেঙ্গলী নিউজ এ খবর প্রকাশ করেছে।

তথ্যমতে, প্রতিটি জেলায় এক ব্যাটালিয়ন বা প্রায় ৮০০ সদস্য এবং উপজেলা বা থানায় দুই থেকে চার প্লাটুন (প্রতি পল্টুনে প্রায় ১৫২ সদস্য) পর্যন্ত সেনা সদস্য স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

নির্বাচনকালীন রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশে অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার  সহায়ক হিসেবেই সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।

তবে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে ও ভোটকক্ষের ভেতরে কোনো প্রকার দায়িত্ব নেবে না সেনা সদস্যরা। অবশ্য কমিশন প্রয়োজনে তলব করলে এ সময়ের আগেও যেকোনো মুহূর্তে মাঠে নামতে প্রস্তুত সেনাবাহিনী।

বৃহস্পতিবার ইসির সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের জরুরি বৈঠকে এসব বিষয় উঠে আসে। কমিশন সচিবালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত ইসির পরবর্তী বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বৈঠকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা ইসিকে জানান, তফসিল ঘোষণার পর সারাদেশে পরিস্থিতি যতটা নাজুক হওয়ার আশঙ্কা ছিল সে তুলনায় অনেক কম হয়েছে। তবে নির্বাচন বানচালে ভোটগ্রহণ, কর্মকর্তা, মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন কার্যালয় ও নির্বাচনী মালামাল পরিবহনের ওপর হামলা আরো বাড়তে পারে।

প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তারা যাতে ভোটগ্রহন কেন্দ্রে না যান সেজন্য তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখানো হতে পারে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চার কমিশনার, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ) লে. জে আবু বেলাল মো. সফিউল হক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সি কিউ কে মোস্তাক আহমেদ, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেসুর রহমান, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ডিজিএফআই, এনএসআই, কোস্টগার্ড, আনসার বাহিনীর প্রধানরা অংশ নেন।

ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই থেকে অর্থাৎ আগামী ৫-৬ ডিসেম্বর থেকে সেনা সদস্যদের মাঠে নামানোর বিষয়ে আলোচনা উপস্থাপন করা হয়। সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতার কথা কমিশনকে জানানো হয়। একইসাথে বলা হয়, দীর্ঘদিন সশস্ত্র বাহিনী মাঠে থাকলে বির্তর্কের সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া ডিসেম্বরে সেনা বাহিনীর শীতকালীন মহড়া থাকবে। তাই, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য কমিশন থেকে তলব করা হলেই তাৎক্ষণিক নির্বাচনী কাজে নেমে পড়ব।

সূত্র জানায়, শীতকালীন মহড়ার অংশ হিসেবে ডিসেম্বর মাসে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। পাশাপাশি, নির্বাচনের কাজটি শেষ করে ব্যারাকে ফিরতে চায় তারা। সশস্ত্রবাহিনীর প্রতিনিধি কমিশনকে আশস্ত করে বলেছেন, নির্বাচনকালীন সময়ে এ বিভাগের মহড়া উপলক্ষে আমরা মাঠে অবস্থান করবো। তাই, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য কমিশন থেকে যেইমাত্র তলব করা হবে আমরা তাৎক্ষণিক নির্বাচনী কাজে নেমে পড়ব। এর জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতির প্রয়োজন পড়বে না।

বৈঠকে সবাই একমত হন যে, এক তরফা নির্বাচনের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সেনা মোতায়েন হলে এ নিয়ে বিতর্ক উঠতে পারে। এমনকি আগেভাগেই সেনা নামানোর কারণে সাধারন মানুষের মধ্যে যে ভীতি রয়েছে তা আরো প্রকট হবে। তাই প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে নির্বাচনী প্রচারণার সাথে সাথে সেনাবাহিনীকে নির্বাচনী মাঠে নামানোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। তবে, পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছলে নির্ধারিত সময়ের আগে এ বাহিনীকে নামানো হতে পারে।

ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ২৯, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.