নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংলাপে ‘রাজি’ বিএনপি

নভেম্বর ১৭, ২০১৩

Fakhrul-BNP
ঢাকা জার্নাল: নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংলাপে বসতে ‘রাজি’ বলে জানিয়েছে বিএনপি, যারা নির্দলীয় সরকারের প্রশ্নে কোনো ছাড় না দেয়ার কথা বলে আসছিল।দুই প্রধান দলের সংলাপে অনিশ্চয়তার মধ্যে বিএনপির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বলেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তার দলের আন্তরিকতার অভাব নেই।

“সেই আলোচনা হতে হবে কেবল নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে, অন্য কোনো বিষয়ে নয়,” বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল।

নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি এর আগে আলোচনার কথা বললেও নিজেদের অবস্থানে ছাড় না দেয়ার কথা বলে আসছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোন আলাপেও খালেদা জিয়া নির্দলীয় সরকারের দাবি মানার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এরপর বিভিন্ন সভায় এমনকি গত বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আলোচনা সভায়ও বিএনপি চেয়ারপারসন নির্দলীয় সরকার দাবির আন্দোলনে কোনো আপস না করার কথা বলেছিলেন।

তার দুই দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী নিশা দেশাই বিশওয়ালের ঢাকায় আসার কয়েক ঘণ্টা আগে প্রেসক্লাবের আলোচনা অনুষ্ঠানে ফখরুল ‘নির্বাচনকালীন’ সরকার নিয়ে সংলাপের উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংসদে অথবা সংসদের বাইরে আলোচনার জন্য বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন অনির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ আওয়ামী লীগের নেতারা।

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের পর থেকে ওই পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত সরকার অর্থাৎ তাদের অধীনেই নির্বাচনের কথা বলে আসছিল।

দুই প্রধান দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে সমঝোতার জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মহলের আহ্বানের মধ্যে গত মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দেন এবং তাতে বিএনপিকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।

দশম সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে শেখ হাসিনার দেয়া এই প্রস্তাবকে নিজেদের অবস্থান থেকে ছাড় হিসেবে দেখাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা বলছেন, বাধ্যবাধকতা না থাকলেও বিরোধী দলকে এই ‘সুযোগ’ দেয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব পাওয়ার পর বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া পাল্টা বক্তব্যে নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা দেন এবং তা নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিতে আওয়ামী লীগকে চিঠি দেয়া হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী তাকে টেলিফোন করলে নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান বিরোধী নেতা।

এরপর আলোচনা আর না এগোনোর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী তার প্রস্তাবিত সর্বদলীয় সরকার গঠনের কাজ শুরু করেন। অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলও টানা হরতালের কর্মসূচি দিতে থাকে।

সর্বদলীয় সরকার গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র জমা নেয়ার পর ফখরুল বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেই সঙ্কটের সমাধান আসবে।

সংলাপ না হওয়ার জন্য পরস্পরকে দায়ী করে দুই পক্ষের বক্তব্যের মধ্যে শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন,তিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে টেলিফোন করেও পাচ্ছেন না।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.