সিএ ফার্মগুলো শিক্ষানবীশদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে
ঢাকা জার্নাল: ইনস্টিটিউট অব চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ’র (আইসিএবি) অবহেলার কারণে চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস (সিএ) ফার্মগুলো শিক্ষানবীশদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।
এমনকি প্রাপ্য ছুটি না দিয়েই ফার্মগুলোতে কাজ করতে বাধ্য করছে শিক্ষানবীশ চাটার্ড একাউন্টস’দের। ছুটির দিন ছাড়াও অতিরিক্ত সময় কাজ করালেও এর বিনিময়ে নির্ধারিত ভাতা পর্যন্ত দিচ্ছে না ফার্মগুলো। হাতে গোনা কয়েকটি ফার্ম নিয়ম নীতি মানলেও বেশিরভাগই নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছে না।
তবে আকবর হোসেন এন্ড কোম্পানী’র মলিক আকবর হোসেন বলেন, তার ফার্মে কোন অনিয়ম নেই। ছুটির দিনে কাউকে দিয়ে কাজ করানো হয়না।” তবে অন্য কোন ফার্মের বিষয়ে তিনি কোন কিছু বলতে চাননি।
দীর্ঘদিন থেকে এসব অভিযোগ থাকলেও ফার্মগুলোর নিয়ন্ত্রকারী প্রতিষ্ঠান আইসিএবি তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। ফার্মগুলোর মান উন্নয়নে সিএ ছাত্র পরিষদ দাবি করে আসলেও আমলে নেয়নি ফার্মগুলো।
সিএ ছাত্র পরিষদ আইসিএবিকে মানোন্নয়নের জন্য বারবার বিভিন্নভাবে অবহিত করলেও আইসিএবি কোন ভূমিকাও নেয়নি।
ছাত্র পরিষদের প্রেসিডেন্ট শশিউর রহমান বলেন, “শিক্ষানবীশদের এসব দাবির স্বপক্ষে বিভিন্ন সময় আইসিএবি বলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা বলতে চাননি।
আইসিএবি’র প্রিন্সিপ্যাল এম এইচ আবুল কালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আইসিএবি থেকে জানানো হয় তিনি দীর্ঘদিন থেকে বিদেশে রয়েছেন।
তার ফার্ম একে আজাদ এন্ড কোম্পানীর অফিসে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করেন এক কর্মকর্তা। তিনি কোন অভিযোগের বিষয়টি ঘুনেই এইসিএবিতে যোগাযোগ করার কথা বলেন।
এদিকে অভিযোগে জানা গেছে, আইসিএবি’র নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে ১৯৪টি চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ফার্ম রয়েছে। এসব ফার্মগুলোর হাতে গোনা দু’একটি আইসিএিবি’র নীতিমালা মানলেও বাকিরা নীতিমালার তোয়াক্কা করে না। দেশের সুনামধন্য ফার্ম সাইফুল শামসুল আলমও নীতিমালা না মেনেই শিক্ষানবীশদের উপর র্নির্যাতন চালায়।এ বিষয়ে সাইফুল শামসুল আলমের ফার্মের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তা রিসিভ হয়নি।
শিক্ষানবীশ চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসরা অভিযোগে জানান, পরীক্ষার আগে নির্ধারিত ছুটি না দিয়ে এটি তালুকদার এন্ড কোম্পানী, তোহা খান এন্ড জামান কোম্পানী, আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী, আহসান রশিদ এন্ড কোম্পানি, ইসলাম জাহিদ এন্ড কোম্পানিসহ শতাধিক ফার্ম নীতিমালার তোয়াক্তা না করেই শিক্ষানবীশ চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।
শিক্ষানবীশরা জানান, তিন বছরের এই কোর্সে প্রতি বছরে দুই বার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নীতিমালা অনুযায়ী পরীক্ষার আগে ৪৫ দিন ছুটি দেওয়ার বিধান রয়েছে। অকৃতকার্যদের দ্বিতীয়বার পরীক্ষার সুযোগ না থাকায় পড়াশুনার কারণে ছুটি দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অথচ দেশের শতাধিক প্রতিষ্ঠান ছুটি দেয়না। এমনকি ছুটির মধ্যে জোর করে কাজ করিয়ে নিলেও টাকা দেওয়া হয়না। কিছু ফার্ম টাকা দিলেও তা খুবই সামান্য।
শিক্ষানবীশরা অভিযোগে জানান, শিক্ষানবীশ চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস’রদের জন্য মাত্র ৬০টি আসন রয়েছে। অথচ শুধু রাজধানীতেই শিক্ষানবীশ চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস রয়েছেন দুই হাজারের বেশি। তবে একশটি আসনের পরিকল্পনা রয়েছে আইসিএবি’র।
একদিনের পরীক্ষায় প্রতি বিষয়ে এক হাজার টাকা ৩০০টাকা নেওয়া হয় যা অনেক বেশি।
সাবেক শিক্ষানবীশ অ্যাকাউন্ট্যান্টসরা জানান, সিএ ছাত্র পরিষদ এর আগে ক্লাস করার সমস্যার জন্য সিএ ভবন ফেরত নেওয়ার জন্য আন্দোলন করে।
পান্থপথে ভাড়া নেওয়া ক্যম্পাসের পাঁচতলায় উঠা নামা করে ক্লাস করতে হয় তাদের। সিএ ভবন ভাড়া দিয়ে কোটি টাকা আয় করলেও হোস্টেলের আসন বাড়ানো হয়না।
ঢাকা জার্নাল, জুন ৫, ২০১৩।