শিল্পকলায় জমজমাট রাধারমণ সংগীত উৎসব
উপমহাদেশের প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী তার বাবা-মা’র জন্মভূমির জন্য কিছু করার প্রবল ইচ্ছে থেকে বাংলাদেশে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চর্চাকে সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ‘আমার মা-বাবা’র জন্মস্থান বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায়। এজন্য বাংলাদেশটা আমার কাছে অন্য কোন দেশ মনে হয়না। কেবলমাত্র ভৌগলিক সীমারেখাই যেটুক বাধা।
আমার বাবা’র প্রিয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে এই দেশের মানুষের জন্য আমি কিছু করে যেতে চাই,’ পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী আজ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র ভবনের দ্বিতীয় তলায় তার আগমন উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রীতি সম্মিলনীতে একথা বলেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এ প্রীতি সম্মিলনের আয়োজন করে। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, ওস্তাদ অসীত দে, ওস্তাদ শাহাদাৎ হোসেন খান, একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, দেশ টিভির ডিরেক্টর তারিক সুজাত এবং সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক সোহরাব উদ্দীন। পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে ঈশ্বরের কৃপা ধন্য স্থান।
এখানে মানুষের কন্ঠস্বর ঈশ্বর দিয়ে পাঠান। এদেশের প্রতিটি জায়গায় সঙ্গীত আছে। কিন্তু শেখার সুযোগ ও প্রক্রিয়া এখানে নেই। তাদের সেই সুযোগটি করে দিতে হবে। লিয়াকত আলী লাকী বলেন, বাংলাদেশে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের চর্চাকে সমৃদ্ধ করতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বছরব্যাপী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর সাথে অনলাইনে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। এ প্রশিক্ষণে আগ্রহীরা ঢাকা এবং বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরগুলো থেকে এ কর্মশালায় অংশ নেবেন। পর্যায়ক্রমে দেশের ৬৪ জেলায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে শীঘ্রই পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী ও শিল্পকলা একাডেমির মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে।
এ বিষয়ে একটি প্রকল্প পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই প্রস্তাব করা হয়েছে। পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী সাস্ত্রীয় সঙ্গীত চর্চাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে গুরু-শিষ্য পরম্পরা লাইভ অনলাইন স্ট্রিমিং ক্লাশ পরিচালনা করেন। তিনি বাবা-মায়ের জন্মভূমি। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যূনতম খরচে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ দেবেন। ১৯৮৯ সালে বাবা-মায়ের সাথে প্রথম বাংলাদেশে আসার স্মৃতিচারণ করে অজয় চক্রবর্তী বলেন, সেদিন আমার বাবার গ্রামের মানুষদের দূরাবস্থা দেখে অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। অনুষ্ঠানে পাওয়া সব টাকা তাদের দিয়ে দিয়েছিলাম। সেদিন থেকেই এদেশের মানুষের জন্য কিছু করে যেতে চাই।