সৌদি বাদশার বিরুদ্ধে নিজের স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নির্যাতনের অভিযোগ
ঢাকা জার্নাল : সৌদি রাজপরিবার ও সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার, বিশেষ করে নারীর অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বহুদিনের। কিন্তু এবার খোদ বাদশাহ আবদুল্লাহর দুই মেয়ে ও তাঁদের মা এই অভিযোগ তুলেছেন।
আবদুল্লাহর দুই মেয়ে সাহার (৪২) ও জাওয়াহের (৩৮) অভিযোগ করেছেন, তাঁদের ও তাঁদের আরও দুই বোনকে ১৩ বছর ধরে জেদ্দার একটি রাজপ্রাসাদে কার্যত বন্দী করে রেখেছেন তাঁদের বাবা। প্রাসাদের ভেতর তাঁদের সার্বক্ষণিক নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সানডে টাইমস পত্রিকাকে ফোন করে ও ই-মেইলের মাধ্যমে সাহার ও জাওয়াহের এ অভিযোগ করেন। তাঁরা বলেছেন, তাঁদের অন্য দুই বোন হালা (৩৯) ও মাহাকে তাঁদের মতোই বন্দী করে রাখা হয়েছে। ওই দুই বোনকে জেদ্দায় অন্য একটি মহলে আটকে রাখা হয়েছে।
মেয়েদের বন্দিদশা থেকে বের করে আনতে রাজকুমারীদের মা আলানাউদ আলফায়েজ জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থায় চিঠি লিখে তাঁদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
সৌদি বাদশা আবদুল্লাহ ৩০ জনের বেশি নারীকে বিয়ে করেছেন। তাঁদের অনেককে তালাকও দিয়েছেন। এই স্ত্রীদের গর্ভে জন্ম নেওয়ার তাঁর ঔরসজাত ৩৮ জন সন্তান-সন্ততি রয়েছে। এদের মধ্যে বিচ্ছেদ হওয়া স্ত্রী আলানাউদ আলফায়েজ ও তাঁর মোট চারটি মেয়েসন্তান। ওই চারজনকেই তিনি আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ডেইলি মেইল-এর খবরে বলা হয়, ই-মেইলে সাহার ও জাওয়াহের জানান, তাঁদের যে মহলে আটকে রাখা হয়েছে সেখানে তাঁদের গৃহস্থালি কাজে সহায়তার জন্য কেউ নেই। তাঁরা কেবল কেনাকাটা ও খাবার কেনার জন্য বাইরে যেতে পারেন। তবে তার জন্য তাঁদের সত্ভাইদের কাছে তাঁদের অনুমতি নিতে হয়। সাহার জানান, তাঁদের তিনজন সত্ভাইকে নজরদারির দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন সৌদি বাদশা।
মেয়েদের বন্দিদশা থেকে বের করে আনতে মা আলানাউদ আলফায়েজ জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থায় যে চিঠি পাঠিয়েছেন তাতে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মেয়েদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাজপ্রাসাদের ভেতর বন্দী করে রাখা হয়েছে।
সাহার বলেছেন, তিনি নারীদের দ্বারা পরিচালিত একটি ব্যাংকে কিছুদিন চাকরি করেছিলেন। এটা রাজপ্রাসাদের ভেতরের গুমোট পরিবেশ থেকে তাঁকে কিছুটা সময়ের জন্য মুক্তি দিয়েছিল। কিন্তু তাঁর বাবা তাঁর চাকরিতে যাওয়া বন্ধ করে দেন।
সানডে টাইমস-এর খবরে বলা হয়, অবরুদ্ধ এক মেয়ে যাঁর নাম হালা, তিনি একজন মনোচিকিত্সক। নব্বইয়ের দশকে তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের সমালোচনাকারী নেতাদের তাঁর হাসপাতালে আটকে রাখা হতো। তাঁদের পাগল বলে আখ্যায়িত করে আটকে রাখা হতো। এই অভিযোগের পর থেকেই মূলত বাদশাহ আবদুল্লাহ তাঁদের ওপর খেপে যান।
ঢাকা জার্নাল, মার্চ ১০, ২০১৪।