শিক্ষা-সংস্কৃতি

‘হিজাব না পরায়’ ছাত্রীদের চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষিকা বরখাস্ত

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় ‘হিজাব না পরায়’ ৯ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগে সৈয়দপুর আবদুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের সেই শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভায় প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত হওয়ায় ওই শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তিনি বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিষয়ের শিক্ষিকা। বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ গোলাম হোসেন।

তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও বিদ্যালয়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত হওয়ায় ওই শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি আমরা। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি। শিক্ষার্থীরা যাতে ভীতি কাটিয়ে স্কুলে আসতে পারে, সেজন্য সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো আমরা।’

এর আগে সকালে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে সভা করে দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপর ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘সকালে ভুক্তভোগী ৯ জনের মধ্যে চার শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি। হিজাব না পরায় চুল কাটার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এরপর সকাল ১০টার দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করেছি। সেখানে জেনেছি, ধর্মীয় রীতিনীতিতে উৎসাহিত করতে ওই শিক্ষিকা এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে এমনটি কারও কাম্য ছিল না। বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষি। তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে সৈয়দপুর আবদুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিয়া মো. ফরিদ বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমাদের বিদ্যালয়ে কারও হিজাব পরা বাধ্যতামূলক নয়। কেউ চাইলে তা পরতে পারে। ওই শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি আমরা।’

এ বিষয়ে ওই শিক্ষিকার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়। জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো আমরা।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, বুধবার বিকালে বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ক্লাস নিচ্ছিলেন ওই শিক্ষিকা। এ সময় ৯ শিক্ষার্থীর মাথায় হিজাব ছিল না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কাঁচি দিয়ে শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেন।