Leadসংবাদ শিরোনামসব সংবাদ

সাকা চৌধুরীর ৩৫ বছরের সন্ত্রাস-সাম্রাজ্যের পতন

21চট্টগ্রাম : দীর্ঘ ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম মহানগরী এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাসী-সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দ- কার্যকর হলে এই সাম্রাজ্যের স্থায়ী পতন সুনিশ্চিত হবে বলেও চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ মন্তব্য করেছেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে চট্টগ্রামে সাকা চৌধুরী কথিত গডফাদার হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। তাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে একের পর এক উত্থান ঘটেছিল দুর্ধর্ষ সব সন্ত্রাসীর। সাকা চৌধুরীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণে থাকা অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী এক সময় পুরো চট্টগ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তবে বর্তমানে অনেকেই নিজ বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। কেউ দেশ ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

সাকা চৌধুরী জেল থেকে মুক্ত হয়ে রাজনীতিতে ফিরলে সন্ত্রাসীরা আবারও চট্টগ্রামে ফেরার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এখন এই মানবতাবিরোধী অপরাধীর মৃত্যুদ-ের রায় কার্যকর হলে এসব সন্ত্রাসীর আর দেশে ফেরা হবে না কোনোদিনই। সাকা চৌধুরী সুদিনে তার ডানহাত হিসেবে সমগ্র চট্টগ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হক। রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের গুহপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফজল হকের চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসের শিকার হয়নি চট্টগ্রামে এমন মানুষ খুব কমই আছে। তার হাতে ঘটেছে একাধিক খুনের ঘটনা। এই সন্ত্রাসী বর্তমানে সৌদি আরবের জেদ্দায় আত্মগোপনে রয়েছেন।

সাকা চৌধুরীর লালিত আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী রাউজানের হিংগলার বৌদ্ধ ভিক্ষু জ্ঞানজ্যোতি হত্যা মামলার আসামি আজিজুল হক জামিনে মুক্তি পেয়ে দুই বছর আগে গোপনে ওমানে পাড়ি জমিয়েছেন।

সাকা চৌধুরীর সন্ত্রাসী বাহিনীর অপর এক দলপতি পুর্বগুজরা ইউনিয়নের আধার মানিক এলাকার বিধান বড়ুয়া বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।সাকা চৌধুরীর লালিত সন্ত্রাসীদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী রাউজানের কদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সবেক চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মোকাম্মেল হায়াত খান মুকি গোপনে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছে বলে জানা গেছেন। মুকি বুয়েট ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি হত্যা মামলার মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি। একই গ্রুপের আরেক সন্ত্রাসী আলী হামজা দুবাইতে অবস্থান করছেন।

 

সাকা চৌধুরী এবং তার ছোটভাই বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর লালিত শীর্ষ সন্ত্রাসী দক্ষিণ রাউজানের দক্ষিণ সর্তা এলাকার রফিকুল ইসলাম বাচাঁইয়্যা, দেলোয়ার, পৌর এলাকার সুলতানপুর কাজী পাড়ার রিপন, রানা, সাপলঙ্গার আজম, সাহা নগরের কাজল, ছত্রপাড়ার হেজা হাসেম, হলদিয়ার জমির, দুলাল, উত্তর সর্তার শফি, হলদিয়ার মোসলেম, রাশেদ, হিংগলার ফজল, জহুর, এয়াসিন নগরের মানিক্যা, পূর্ব রাউজানের সাহালম সাহাইয়্যা, কদলপুরের এয়ার খান, টিপু, পশ্চিম গুজরার বদুমুন্সি পাড়া এলাকার রমজান আলী, ফরিদ, ডাবুয়ার কলমপতির আলী আজম অশ্রু, নোয়াপাড়ার আবু তাহের, ডালিম, উরকিরচরের আবুল কাসেম মুন্না, দক্ষিণ হিংগলার জাপটা বইদ্যা, পূর্ব গুজরার বড়ঠাকুর পাড়ার জাহেদসহ সাকা সাম্রাজ্যের পালিত সন্ত্রাসীরা এখন পালিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.