`শ্রমিকদের সাথে অমানবিক আচরণ’
ঢাকা জার্নাল: তিন মাসের বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস প্রদান এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলনরত সোয়ান গার্মেন্ট শ্রমিকদের ১৪তম দিনের অবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে সমাবেশে অংশ নেন সৈয়দ আবুল মকসুদ।
তিনি বলেন, শ্রমিকরা চরম অমানবিক আচরণের শিকার। সরকার এবং মালিক পক্ষের নির্বিকার ভূমিকা নিন্দনীয়। যে শ্রমিকের শ্রমে ঘামে মালিকরা সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে, সরকার উন্নয়নের বাহাদুরি করছে।
গত ১২ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সোয়ান শ্রমিকরা। শনিবার ১৪তম দিনে তিন মাসের বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস প্রদান এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও বে-আইনীভাবে বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবি জানানো হয়।
সকালে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে সংহতি জানান লেখক গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বর্ষীয়ান শ্রমিক নেতা বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি সহিদুল্লাহ চৌধুরী।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কার্যকরী সভাপতি সাদেকুর রহমান শামীমের সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রুহুল আমীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কে. এম. মিন্টু, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মঞ্জুর মঈন, কেন্দ্রীয় নেতা জয়নাল আবেদিন, মোহাম্মদ শাজাহান, নুরুল ইসলাম, আব্দুস সালাম বাবুল, শেখ ফরিদ, জাকির হোসেন, মিনতি রাণী প্রমুখ।
সমাবেশে সৈয়দ আবুল মকসুদ আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শ্রমিকদের সকল বকেয়া পরিশোধ করার দাবি জানান।
বর্ষীয়ান শ্রমিক নেতা সহিদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরকারের দায়িত্ব ছিলো শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করা, কিন্তু তারা তা করেন নাই বরং দাঁড়িয়েছেন মালিকদের পক্ষে। সরকার ও রাষ্ট্রযন্ত্র যদি শ্রমিকের খোড়াকের যোগান না দিতে পারে তাহলে তার গদিতে আসিন থাকার কোন অধিকার নেই। তিনি শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে সারা দেশের শ্রমজীবি-মেহনতি মানুষ এবং বিবেকবান সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
সভপতির বক্তব্যে সাদেকুর রহমান শামীম বলেন, আজ ১৪ দিন ধরে আমরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। মালিকগোষ্ঠী চায় শ্রমিকরা হঠাৎ করে রাস্তায় নেমে ব্যাপক ভাঙচুর করবে এবং একদিনের মধ্যে তাদের আন্দোলন শেষ হয়ে যাবে। তার চায় না গার্মেন্ট শ্রমিকরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে অভ্যস্ত হোক। সোয়ান গার্মেন্টের আন্দোলন শ্রমিকদের জন্য একটি বিশেষ শিক্ষা। এই আন্দোলন আমরা ধারাবাহিকভাবে করছি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।
তিনি আরও বলেন, সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ছাড়া শ্রমিকরা ঘরে ফিরে যাবে না। সোয়ান গার্মেন্টের আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে সংহতি জানিয়ে সারাদেশে শিল্পাঞ্চলগুলোতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারাদেশের শ্রমিক সোয়ানের শ্রমিকদের পাশে আছে। প্রয়োজনে সক্রিয় আন্দোলনের মধ্যদিয়ে সোয়ান শ্রমিকদের দাবি আদায়ে সরকারকে তারা বাধ্য করবে। এতে যদি উৎপাদন ব্যহত হয় তার দায়দায়িত্ব সরকার এবং মালিক পক্ষকে নিতে হবে।
ঢাকা জার্নাল, জুলাই ২৫, ২০১৫।