শোষিত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে সমাজতন্ত্রের সংগ্রামে সামিল হোন
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ঢাকা মহানগর কমিটির সাবেক নেতা, সূত্রাপুর থানা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড মাধব চন্দ্র দাসের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পার্টির সূত্রাপুর থানা কমিটির উদ্যোগে আজ বিকেলে গে-ারিয়া কিশলয় কচিকাঁচা বিদ্যানিকেতন মিলনায়তনে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিপিবি সূত্রাপুর থানা কমিটির সভাপতি আবু তাহের বকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন পার্টির ঢাকা কমিটির সম্পাদকম-লীর সদস্য কমরেড মোসলেহ উদ্দিন, সূত্রাপুর থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সাহা, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী গে-ারিয়া শাখার সভাপতি রতন কুমার দাস, পার্টি নেতা আসলামউদ্দিন, পরিমল চন্দ্র মন্ডল, সাইফুল ইসলাম সমীর, সুমান কুমার সাহা, যুব ইউনিয়ন নেতা আনোয়ার হোসেন, ছাত্র ইউনিয়ন নেতা দীপক শীল প্রমূখ।
আলোচনাকালে কমরেড মোসলেহ উদ্দিন মাধব চন্দ্র দাসের জীবন ও সংগ্রামের নানা দিক তুলে ধরে বলেন, তিনি ১৯৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা যোদ্ধা এবং স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সকল গণআন্দোলনে সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেছেন। কৈশর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সূত্রাপুর অঞ্চলের গণমানুষের প্রতিটি সংগ্রামের সাথে তিনি একাত্ম ছিলেন। তার কর্মজীবনের প্রতিটি শিক্ষাকে ধারণ করে আমরা উজ্জীবিত হই। একজন কমিউনিস্টের সকল গুণাবলী তিনি অর্জন করেছিলেন বলেই সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছিলেন। আজকে যখন জঙ্গিবাদী আর মৌলবাদী গোষ্ঠী মুক্ত চিন্তার মানুষ হত্যা করছে, গণতন্ত্রের নামে দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠানিক রুপ পাচ্ছে সেই সময়ে কমরেড মাধব চন্দ্র দাসের মত মানবিক গুলাবলীসম্পন্ন নেতার খুবই প্রয়োজন।
বিকাশ সাহা বলেন, কমরেড মাধব চন্দ্র দাস অগ্নিযুগের বিল্পবীদের সংস্পর্শে এসে কমিউনিস্ট আন্দোলনে যুক্ত হন। সকল মানুষকে একত্রিত ও সংগঠিত করার যোগ্যতা ছিলো তাঁর। আদর্শের প্রতি আনুগত্য আর কর্মে নিষ্ঠাবোধ তাঁর চরিত্রের বিশেষ দিক। তরুণ আর যুব কর্মীদের নিপীড়িত-লাঞ্ছিত-শোষিত মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে সমাজতন্ত্রের সংগ্রামে সামিল হতে তিনি অনুপ্রাণিত করেছেন।
রতন কুমার দাস বলেন, কমরেড মাধব চন্দ্র দাস আজীবন সংগ্রাম করেছেন সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। ব্যক্তি জীবনে তিন ছিলেন স্বল্পভাষী আর তাঁর জীবন প্রবাহ ছিলো অত্যন্ত সাধারণ। একজন সার্থক কমিউনিস্ট ছিলেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে আবু তাহের বকুল বলেন, কমরেড মাধব চন্দ্র দাস আমাদের আর্দশের শিক্ষক। তাঁর জীবন, কর্ম আর সংগ্রাম থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদেরকে অগ্রসর হতে হবে সাধারণ মানুষের বাসযোগ্য রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য। তিনি বলেন, মুক্তিযদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমেই কেবল সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন সম্ভব।
উল্লেখ্য, কমরেড মাধব চন্দ্র দাস ২০০৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর মৃত্যবরণ করেন। স্মরণসভার শেষে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনার গেয়ে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।