Lead

ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, তরুণীর আত্মহত্যা

নেত্রকোনার মদনে ধর্ষণের শিকার এক তরুণী (২১) আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে। উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের তিয়শ্রী গ্রামে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপতালে পাঠায় পুলিশ। মামলা তুলে নিতে হুমকি ও অশ্লীল ভিডিও নেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি সহ্য করতে না পেরে তরুণী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দশ বছর আগে উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের ধুবাওয়ালা গ্রামের মেনু ভূঁইয়ার ছেলে রুমেলের (২৫) সঙ্গে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা হয় ওই তরুণীর। তখন থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে বিয়ের কথা বলে তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে রুমেল। ২০২০ সালের ২ আগস্ট রুমেল ওই তরুণীকে অপহরণ করে পুনরায় ধর্ষণ করে। পরে বিয়ের দাবিতে ৩ আগস্ট রুমেলের বাড়িতে বিষ হাতে অনশনে বসে তরুণী। পরিবারের লোকজন বিষয়টি মেনে না নেওয়ায় বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় রুমেল। পরে ২০২০ সালের ৭ আগস্ট তরুণীর ভাই বাদী হয়ে আদালতে ধর্ষণ মামলা করেন। পরে ডাক্তারি পরীক্ষার শেষে আদালতে ২২ ধারা জবানবন্দি দেন ওই তরুণী। জবানবন্দিতে তিন জনের নাম উল্লেখ করলেও পুলিশ আসামিদের অবৈধ প্রভাবে শুধু রুমেলকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এদিকে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেন বাদীপক্ষ। বর্তমানে মামলাটি আদালতে চলমান রয়েছে।

তরুণীর ভাইয়ের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) ঈদের কেনাকাটা করতে পৌর সদরের মার্কেটে যাই। আসামি রুমেলের বড় ভাই রাসেল মদন পৌর সদরের মার্কেটে কাপড়ের ব্যবসা করেন। রাসেল আমাদের মার্কেটে পেয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়। মামলা তুলে না নিলে আসামির মোবাইলফোনে ধারণ করা আমার বোনের অশ্লীল ভিডিও নেটে ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয়। এসব সহ্য করতে না পেরে আমার বোন আত্মহত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাসেল বলেন, ঈদের সময়ে আমি দোকান নিয়ে ব্যস্ত থাকি। তারা গতকাল মার্কেটে এসেছিল কিনা তা আমার জানা নেই। মামলা তুলে নিতে তাদেরকে কোনও হুমকি আমি দেইনি।

মদন থানার ওসি মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের লোকজন যদি কারও বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।