ঢাকা: দলীয় ৩৯ রানে তিন উইকেট খোয়ানোর পর প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে এখন লড়াকু সংগ্রহের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন কিউই ব্যাটসম্যান রস টেইলর ও গ্র্যান্ট ইলিয়ট। দু’জনের জুটি থেকে ইতোমধ্যে যোগ হয়েছে শতাধিক রান। অর্ধশতক পূরণ করে ৬৮ রানে খেলে যাচ্ছেন ইলিয়ট, অপরপ্রান্ত আগলে রেখে ৩৭ রানে খেলছেন রস টেইলর।
প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, মার্টিন গাপটিল ও কেন উইলিয়ামসনের উইকেট খুইয়ে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৩৪ ওভারে ১৪২ রান।
বাংলাদেশ সময় রোববার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শুরু হওয়া অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার শিরোপা জয়ের মহারণে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কিউই দলপতি ম্যাককালাম।
বড় সংগ্রহের আশায় এ সিদ্ধান্ত নিলেও সে আশায় যেন গুঁড়েবালি হয়ে পড়ে কিউইদের। শুরুতেই শূন্য রানে ফিরে যান ড্যাশিং ওপেনার ম্যাককালাম। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই দলীয় এক রানের মাথায় সরাসরি তার স্ট্যাম্প উড়িয়ে সাজঘরের পথ ধরিয়ে দেন অজি স্পিডস্টার মিচেল স্টার্ক।
তার বিদায়ে নামেন কেন উইলিয়ামসন। টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা মার্টিন গাপটিলের সঙ্গে মিলেই উইলিয়ামসন ইনিংস মেরামতের চেষ্টা চালান। কিন্তু গাপটিলও যেন খেই হারিয়ে ফেলেন। অজি অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের করা ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে স্ট্যাম্পের বেল পড়ে যায় তার। সাজঘরে ফেরার জন্য ব্যাট-প্যাড গোছানোর আগে গাপটিল ৩৪ বলে করেন মাত্র ১৫ রান। দলীয় সংগ্রহ তখন ৩৩ রান।
গাপটিল ইনিংসের সমাপ্তির পর মাঠে নামেন রস টেইলর। তবে, টেইলরের সঙ্গে বোঝাপড়া শুরু করার আগেই সাজঘরের পথ ধরেন উইলিয়ামসন। ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে মিচেল জনসনের বলে তাকেই ক্যাচ দিয়ে বসেন উইলিয়ামসন। সাজঘরে ফেরার আগে উইলিয়ামসন করেন ৩৩ বলে ১২ রান।
এ মহালড়াই শুরুর আগে থেকেই বলা হচ্ছে, প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ নিতে প্রাণপণ লড়াই করবে রিচার্ড হ্যাডলি-মার্টিন ক্রো’র নিউজিল্যান্ড, অন্যদিকে ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে পঞ্চমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করতে চাইবে অস্ট্রেলিয়া।
শুরু থেকেই দুর্দান্ত দাপটের সঙ্গে খেলছে এবারের বিশ্বকাপের সহযোগী আয়োজক নিউজিল্যান্ড। পুরো টুর্নামেন্টে ব্ল্যাকক্যাপসরা অপরাজিত থেকে স্বপ্নের ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে। আর বিশ্বকাপের আসরে এবারই প্রথম ফাইনালে উঠলো কিউই বাহিনী। চলতি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের খেলায় অস্ট্রেলিয়াকেও এক উইকেটে হারিয়েছিল তারা।
অন্যদিকে, গ্রুপ পর্বের পাঁচ (বাংলাদেশের সঙ্গে ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি) খেলায় চারটি জয় এবং কোয়ার্টার ও সেমিফাইনালের বাধা পেরিয়ে শিরোপার শেষ ময়দানে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। সেমিফাইনালে তারা গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে ৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে।
একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে দু’দলের মোট ১২৫ বার দেখা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪টিতে অজিরা এবং ৩৫টিতে ব্ল্যাকক্যাপসরা জয় পেয়েছে। বাকি ছয় খেলা ছিল অমীমাংসিত।
ইতিহাস-পরিসংখ্যানেরই পুনরাবৃত্তি ঘটবে, নাকি নতুন ইতিহাস রচিত হবে, তার জন্য রোববারের এ মহারণের সাক্ষী হতে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে যেমন ৮০-৯০ হাজার দর্শক উপস্থিত থাকছেন, তেমনি বিশ্বজুড়ে টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখছেন কোটি ক্রিকেটভক্ত।