Leadসংবাদ শিরোনামসব সংবাদ

‘ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত চার লক্ষাধিক শিশু গৃহকর্মী’

32দেশে চার লক্ষাধিক শিশু মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ গৃহকর্মে নিয়োজিত রয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি)।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু, শিশু গৃহকর্মী ও বস্তিতে বসবাসকারী শিশুদের সুরক্ষা ও অধিকার’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় সোমবার বিকালে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এএসডি জানায়, গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুরা দৈনিক গড়ে ১৫ ঘন্টা কাজ করে থাকে, যার প্রতিটি কাজই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তবে কাজের ঝুঁকির বিচারে তাদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা খুবই সীমিত। একইসঙ্গে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের জীবনের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

এএসডি’র নির্বাহী পরিচালক জামিল এইচ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম। এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর পরিচালক মোশাররফ হোসেন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন এএসডি’র উপ-নির্বাহী পরিচালক মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘গৃহকর্ম এখনও পেশা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ না করায় শ্রম আইন দ্বারা এ খাতটি সুরক্ষিত নয়। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৩৮টি কর্মক্ষেত্রের মধ্যে গৃহকর্মের মতো একটি মারাত্মক ও বিপজ্জনক কাজ স্থান পায়নি সরকারের তালিকায়। একইসঙ্গে ২০১০ সালে খসড়া গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা গৃহীত হলেও তা এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। ফলে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুরা সম্পূর্ণ অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে থেকে শোষণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।’

তিনি জানান, এএসডির উদ্যোগে গত বছর থেকে এ পর্যন্ত ৯৬০ জন শিশুকে উপ-আনুষ্ঠানিক (প্রাক-প্রাথমিক) শিক্ষা প্রদান করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৯০৩ জনকে মূলধারার প্রাথমিক শিক্ষায় সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়েছে। একইসঙ্গে ৩০৭ জন পথশিশুকে ড্রপইন সেন্টারভিত্তিক সেবা, ১৮ জন শিশুকে পরিবার ও সমাজে পুনঃএকীকরণ করা, ১৩৪ জন শিশু গৃহকর্মীকে সাধারণ শিক্ষা ও ২০ জনকে কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে ৯০ জন পথশিশুকে (৩০জন ছেলে ও ৬০ জন মেয়ে) ড্রপইন সেন্টারে আবাসিক ও লেখাপড়ার সুযোগ প্রদান করা হচ্ছে।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম বলেন, ‘সরকার প্রাথমিক শিক্ষায় প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে। সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। শিশুদের জন্য মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই শিশুরা যে টাকার অভাবে পড়ালেখা করতে পারে না এটা একদম ভ্রান্ত ধারণা।’

তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ সবার জন্য। সবাইকে নিয়ে একত্রে কাজ করলে আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব। তবে আজকের ধারণাপত্রে শিশুদের ডিজিটাল সেবা দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। যদি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হয়, তবে আমরা এএসডির মাধ্যমে শিশুদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করব।’

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.