শীর্ষ সংবাদসংবাদ শিরোনাম

‘গ্রামীণ ব্যাংককে সরকারি করলে সোনালী ব্যাংক হয়ে যাবে’

moududঢাকা জার্নাল: গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারি করার জন্য সরকার যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাতে করে এই ব্যাংকটি সোনালী ব্যাংকের মতো একটি ব্যাংকে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র পার্লামেন্টেরিয়ান ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

বুধবার জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনের শুরু পয়েন্ট অর্ডারে সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদে নারীর ক্ষমতায়নের উপর বক্তৃতাকালে মওদুদ আহমদ একথা বলেন।

তিনি বলেন, সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে নারীর ক্ষমতায়ন রাষ্ট্র কর্তৃক যাবতীয় সুযোগ সুবিধার প্রদানের উল্লেখ রয়েছে। বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়নে যথেষ্ঠ কাজ করছে। আমাদের সরকারও নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশে গ্রামীন ব্যাংক। এই ব্যাংকে সরকারের ৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে আর বাকি ৯৫ শতাংশ শেয়ার বেসরকারি। এই ব্যাংকে মোট ৮৪ হাজার শেয়ার হোল্ডার রয়েছে যার ৯৭ ভাগ নারী। ৪ কোটি মানুষের ভাগ্য গ্রামীণ ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল। এই ব্যাংকটির মোট সম্পদের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সরকার একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এই ব্যাংকটিকে সরকারি করার জন্য। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ৫১ ভাগ শেয়ার সরকার নেয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। সরকার যদি এই সিদ্ধান্ত গ্রামীণ ব্যাংককে নি:শেষ করে দিবে ব্যাংকটি ধ্বংস হয়ে যাবে।

মওদুদ বলেন, আমরা দেখেছি রাষ্ট্রয়ত্ব ব্যাংকগুলোর অবস্থা। সোনালী ব্যাংকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। অবশ্য অর্থমন্ত্রীর ভাষায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা কিছু না। কিন্তু এই টাকা বাংলাদেশের জনগণের জন্য অনেক কিছু। এখন যদি সরকার গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারি করে ১৯টি সমিতির মাধ্যমে পরিচালিত করে তাহলে এই ব্যাংক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। এটা দেশ ও জনগণের জন্য আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত।

নারীর ক্ষমতায়নের প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিজে একজন নারী হিসেবে সংসদে স্পিকার হিসেবে নারীকে নির্বাচিত করেছেন। তিনি আমাদের নেত্রীকে একসঙ্গে ছবি তোলার জন্য আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নেত্রীর পাশাপাশি তসলিমা বেগমকেও দাওয়াত দেয়া উচিত ছিলো ছবি তোলার জন্য। কারণ এই তসলিমা বেগমই প্রথম নারী যিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রথম ঋণ গ্রহিতা ছিলেন। এই এই নারীই ড. মুহাম্মদ ইঊনূসের সঙ্গে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষে। এই নারী যিনি বাংলাদেশের জন্য অনন্য মর্যাদা এনে দিয়েছেন।

ড. মুহাম্মদ ইঊনূস প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, বর্তমান সরকার ড. ইঊনূসকে সম্মান দেখাতে পারেনি। কেন পারেনি তা জানি না এবং সেবিষয়ে কথাও বলতে চাই না। তবে এই ড. ইঊনূসই বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করেছে। এমন কোন দেশ নাই যে দেশ তাকে সম্মান করে না। তার অবস্থান যা ছিলো তাই আছে এবং চিরকাল থাকবে। ড. ইঊনূসকে অপমান করে সরকার বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বের কাছে কলঙ্কিত করেছে। কিন্তু সরকার পারতো তাকে ব্যবহার করে বহির্বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে। আমরা ক্ষমতায় আসলে গ্রামীণ ব্যাংকে পূর্বে অবস্থায় ফিরিয়ে এনে ড. ইঊনূসকে যথাযথ সম্মান দিবো।

ঢাকা জার্নাল, জুন ২৬, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.