রাজনীতি

ক্ষমতায় গেলে নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করবে বিএনপি: ফখরুল

আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ সব ধরনের নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করবে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (২২ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বিএনপি আয়োজিত গণমাধ্যম সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার ঘোষণা, আমরা সরকার গঠন করলে মুক্ত গণমাধ্যমের অন্তরায় ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’সহ সব ধরনের নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করবো। গণমাধ্যমে প্রকাশিত যেকোনও বিষয় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা সংস্থা প্রেস কাউন্সিলে ফয়সালা না করে কোনোভাবেই যেন আদালতে মামলা দায়ের করতে না পারেন সেটা নিশ্চিত করা হবে।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলেছি যে গণমাধ্যমকে স্বাবলম্বী করার জন্য বিএনপি বিজ্ঞাপনের সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করবে। পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট সংখ্যক প্রকাশনা, প্রচারণা কিংবা টিআরপির ভিত্তিতে গণমাধ্যমগুলোকে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার চিন্তাও বিএনপির রয়েছে। দেশের ব্যবসা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বিজ্ঞাপন প্রদানের ক্ষেত্রে দেশীয় গণমাধ্যমগুলোকে অগ্রাধিকার দেয় সেটি নিশ্চিত করার পরিকল্পনাও আমাদের (বিএনপি) রয়েছে।”

সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড সব গণমাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারও করেন বিএনপি মহাসচিব। দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে গোটা জাতি বিপন্ন হয়ে পড়েছে, বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এই জাতি বা রাষ্ট্রকে উদ্ধার করতে হলে একটা ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য জনগণের মধ্যে সৃষ্টি করতে আমরা যদি না পারি, তাহলে এখান থেকে মুক্ত হওয়ার কোনও পথ নেই।’

‘সেজন্য আমাদের সবার দায়িত্ব, সাংবাদিকরা তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন, রাজনীতিবিদরা তাদের দায়িত্ব তারা পালন করবেন—এরমধ্যে একটা ঐক্য সৃষ্টি করে আমরা যেন দেশে গণতন্ত্রকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে পারি সেই উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।’

ক্ষমতার পরিবর্তনে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা খুব আশাবাদী। বাংলাদেশের মানুষ কখনও পরাজিত হয়নি। টানেলের পেছনে আলো দেখছি বলেই পুনরায় আমরা উৎসাহিত বা উৎফুল্ল হচ্ছি তাই নয়। আমরা সবসময়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করেছি, কাজ করে যাচ্ছি। সরকারে যখন ছিলাম তখনও করেছি, সরকারে নেই এখনও গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র হত্যায় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ আইন, প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে এবং শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় আলোচনা সভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৭ মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, দিনকালের সম্পাদক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, এমএ আজিজ, নুরুল আমিন রোকন, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, কামাল উদ্দিন সবুজ, বাকের হোসাইন, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সরদার ফরিদ আহমদ, কাদের গনি চৌধুরী, ইলিয়াস খান, শহীদুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, মুরসালিন নোমানী, শফিক আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।