এক গাছেই ৪০ প্রজাতির ফল!
ঢাকা জার্নাল: মানুষের যে অসাধ্য বলে কিছু নেই তা আবারও একবার প্রামাণ করলেন স্যাম ভন অ্যাকেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সিরাসিউজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক নয় বছর একটি গাছের পেছনে ব্যয় করে প্রায় অসাধ্য সাধন করলেন। একই গাছে ফলবে ৪০ প্রজাতির ফল!
এ বিষয়ে তার বক্তব্য, ভাবনাটি ছিল এমন যে, গোটা ফলের বাগান একটি গাছের মধ্যে পাওয়া।
একটি গাছেই ৪০টি আলাদা আলাদা ফল ঝুলছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে, কোনো শিল্পীর ভাস্কর্য। কিন্তু পুরো ব্যাপারটিই বাস্তব!
তিনি নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিস্যুয়াল অ্যান্ড পারফর্মিং আর্ট বিভাগের একজন ভাস্কর্য শিল্পী। এই অবিশ্বাস্য কাণ্ড ঘটাতে ‘গ্রাফটিং’ বা ‘কলম’ নামে একটি পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন তিনি।
এ পদ্ধতিতে দুটো গাছের কলম একত্রে জুড়ে দিয়ে তাদের শিরা কেটে দেওয়া হয়। যাতে একটি আরেকটির সাথে মিশে যেতে পারে।
এই শিরাগুলোকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ফোলেম ও জাইলেম। এদের মাধ্যমে গাছের পানি, সুগার ও খনিজ পদার্থ শেকড় থেকে পাতায় পৌঁছায়।
এভাবেই একে একে ৪০টি গাছ কলম করে তিনি কাজটি করেছেন। বছরের পর বছর সাধনায় তিনি পৌঁছেছেন তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে।
এদের মধ্যে দুই বছরে ২০ থেকে ২৫টি ফলগাছ একসঙ্গে বেড়ে উঠেছে। দুই বছর পর তাদের যখন নতুন শাখা গজাতে শুরু করে, তখন তিনি তার সাথে আরও গাছের কলম যোগ করেন।
ভন অ্যাকেন বলেন, তাদের নিজস্ব জিনগত বৈচিত্র্য অক্ষুণ্ন রেখেই তাদের লালন করা হয়েছে। আপনি আলাদা ধরনের সব ফুল-ফলই এই গাছে দেখতে পাবেন।
এছাড়াও তিনি একটি ‘টাইমলাইন’ তৈরি করেছেন যেখানে বিভিন্ন ধরনের ফুল আছে। কলমের সময় ধরে তিনি এসব ফুলের রং নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
কিন্তু বিজ্ঞান অনেকটা বাই প্রোডাক্ট বা উপজাতের মতো। সত্যিই, আমার জন্য এটা রূপকথা, যোগ করেন অধ্যাপক ভন অ্যাকেন।
কেনো এক গাছে ৪০ ফলের বিচিত্র খেয়াল মাথায় এলো? তার উত্তর, নিশ্চয়ই এটা পৃথিবীতে খিদের সমস্যা মিটিয়ে দেবে না! কিন্তু আশাকরি এ ধরনের চিন্তা অনেককে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ১৬, ২০১৪।