সংঘাত আরো বাড়বে
ঢাকা জার্নাল: সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা কমবে না, বরং বাড়বে৷ বিএনপি এখন সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে যে কোনো পথ অবলম্বনে পিছ পা হচ্ছে না৷
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, এর মধ্য দিয়েই হয়ত একটি সমাধান আসবে৷
মঙ্গলবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করবে বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোট৷ এই হরতাল আগে ডেকেছিল জামায়াতে ইসলামী শিবির সভাপতি দেলোয়ার হোসাইনের মু্ক্তির দাবিতে৷ কয়েক ঘণ্টা পর আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিএনপিও একই দিন হরতাল ডাকে ১৮ দলের ব্যানারে৷
কিন্তু হরতালের আগেই দেশে ব্যাপক সহিংসতা শুরু হয়৷ এই সব সহিংস ঘটনা ঘটে রবি ও সোমবারে৷ সোমবার রাজশাহীতে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে অস্ত্র কেড়ে নেয় শিবির কর্মীরা৷ ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে টেলিভিশন চ্যানেলের গাড়িসহ ৩টি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়৷ দোয়েল চত্বর এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়৷ আগের দিন রবিবার ঢাকাসসহ সারাদেশে অর্ধশত গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয়৷ বোমার আঘাতে উড়ে যায় এক পুলিশ সদস্যের দুই হাতের কব্জি৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই অস্থিরতা এবং সহিংসতা বন্ধ হবে না, আরো বাড়বে৷”
তিনি বলেন, বিরোধী দল এখন যে কোনো উপায়ে সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য বাধ্য করতে চাইছে৷ এজন্য তাদের হরতালসহ রাজনৈতিক কর্মসূচি অনেক বেশি সহিংস৷ শুধু তাই নয়, তারা হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামি দলগুলোকে কাছে টানার জন্য তাদের কর্মসূচিতে সমর্থন দিচ্ছে৷
সেনাবাহিনীর মাধ্যমেও সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে তারা৷ তবে সরকার এখনো তার অনঢ় অবস্থান বজায় রাখায় সংঘাত অনিবার্য বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, এই সংঘাত সংঘর্ষের মধ্য দিয়েই হয়ত শেষ পর্যন্ত একটি সমাধানে আসবে সরকার ও বিরোধী দল৷ কিন্তু যতদিন সমঝোতা না হবে ততদিন দেশ ও দেশের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি, প্রাণহানি বাড়তেই থাকবে৷ এ নিয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ৷ কিন্তু তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখানোর কোনো সংগঠিত জায়গা নেই৷ এটাই দুঃখের বিষয়৷
তিনি বলেন, রিরোধী দল শুধু দেশেই নয় দেশের বাইরেও কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে৷ তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দেশের পরিস্থিতি তাদের মতো করে তুলে ধরছে৷ তারা চাইছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করুক৷ সব মিলিয়ে বিরোধী দল এখন এক সর্বাত্মক রাজনৈতিক যুদ্ধে নেমেছে৷
অন্যদিকে, ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা বলেছেন, বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সংকট চলছে তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়৷ তবে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সহিংসতা চলছে তা গ্রহণযোগ্য নয়৷ তিনি মনে করেন, সংলাপের মাধ্যমেই রাজনৈতিক সংকটের সমাধান সম্ভব৷ কিন্তু ততক্ষণে দেশের ও দেশের মানুষের অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে৷