রাসিক নির্বাচন: বিএনপি থেকে দুইজনের গুঞ্জন হলেও আ.লীগ থেকে একক প্রার্থী
রাজশাহী: রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে আবারো প্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। লিটনের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে দলের মধ্যে কোনো বিরোধ না থাকলেও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দুইজন প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
এদের একজন হচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও নগর সভাপতি মিজানুর রহমান মিনু ও অপরজন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে খায়রুজ্জামান লিটনকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। মেয়র নিজেও আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা জানিয়েছেন খায়রুজ্জামান লিটনকে ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথমে ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি মহাজোটের একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। মহাজোটের শরীক দলগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। তারা প্রার্থী দেবেন না বলে জানানো হয়েছে।
বিএনপির নির্বাচনে আসা-না আসা নিয়ে পৃথক কোনো ভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু দীর্ঘসময় মেয়র ছিলেন। তার আমলে তিনি কী করেছেন, তা নগরবাসী জানে। আর বর্তমান মেয়র তার এক মেয়াদে নগরবাসীকে কী উপহার দিয়েছেন, তা রাজশাহীবাসীর পাশাপাশি দেশের মানুষও জানে। বাইরে থেকে মানুষ এসে এখন রাজশাহীকে দেখে বিস্মিত হয়। ফলে আমাদের অন্যসব ভাবনার চেয়ে রাজশাহীর মানুষের প্রত্যাশা পূরণের ভাবনাটাই বেশি। রাজশাহীর মানুষের প্রত্যাশার কারণেই আমাদের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন।’
অপরদিকে, স্থানীয় বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মী নির্বাচন নিয়ে ভাবনা শুরু করেছেন। এমনকি বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও নগর সভাপতি মিজানুর রহমান মিনু নিজেও প্রার্থিতার বিষয়ে আগ্রহী। কয়েক মাস আগে থেকেই নির্বাচন নিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন মিনু। নগরীজুড়ে লিফলেট বিতরণ, পোস্টার লাগানোর ইঙ্গিত থেকেই বোঝা যায় এ নেতার মেয়র নির্বাচন নিয়ে চিন্তা শুরু করেছে।
মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘সিটি নির্বাচন নগরবাসীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। নগরবাসী এ নির্বাচন সানন্দে গ্রহণ করেছে। নগরবাসী চান তাদের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। সে হিসেবে ১৭ বছর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় জনমতের প্রশ্নে আগামী নির্বাচনেও প্রার্থী হতে চাই।’
তবে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে প্রার্থী করা হলেই কেবল নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘তফশিল ঘোষণার পর আগামী নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যে নগর শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেছেন। তাতে আওয়ামী লীগকে ছাড় না দেয়ার বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। সে ক্ষেত্রে প্রার্থী কে হবেন এ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামের বাইরে গিয়ে দলের কেউ নির্বাচন করবে না।’
নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ও সরকারবিরোধী আন্দোলন দুটোকে মাথায় রেখে কর্মসূচি দেয়া পালন করা হবে।’
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন জানান, বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
মিনুর পাশাপাশি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের নাম দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে শোনা যাচ্ছে। গত সিটি নির্বাচনে বিএনপি দলীয়ভাবে অংশ না নিলেও মোসাদ্দেক হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেবার তিনি বর্তমান মেয়র লিটনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। সে কারণে এবারো তার নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগ্রহ রয়েছে।
তবে এ প্রসঙ্গে বুলবুল জানান, দল নির্বাচনে যাবে কি না সেই সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে এ ব্যাপারে তিনি কোনো কথা বলতে চান না।
ঢাকা জার্নাল, মে ১, ২০১৩