রাসিকেও ১৮ দলীয় প্রার্থী, বুলবুল বিজয়ী

জুন ১৬, ২০১৩

Bulbul-sm-120130615132927ঢাকা জার্নাল: রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আনারস প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।

নগরীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলকে সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে রিটার্নিং অফিসার সুভাষ চন্দ্র সরকার শনিবার দিনগত রাত সোয়া একটায় বেসরকারিভাবে তাকে মেয়র পদে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

ঘোষিত ফলাফলে জানা যায়, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল পেয়েছেন এক লাখ ৩১ হাজার ৫৮ ভোট। অন্যদিকে, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন তালা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮৩ হাজার সাতশ ২৬ ভোট।

এর ফলে, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল খায়রুজ্জামান লিটনের চেয়ে ৪৭ হাজার তিনশ ৩২ ভোট বেশি পেয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বেসরকারিভাবে মেয়র পদে নির্বাচিত হলেন।

এছাড়া মেয়র পদে একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান মোট ভোট পেয়েছেন সাতশ ৯১ ভোট।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল একশ ৩৭টি। মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৮৬ হাজার নয়শ ১৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৪৩ হাজার ৩৯৫ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৪৩ হাজার ৫২২ জন।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে (রাসিক) মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা সংরক্ষিত ১০ এবং সাধারণ ৩০। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখ্যা ৬৬ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখ্যা ১৫৫ জন।

উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন গত ২৯ এপ্রিল বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।

তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়পত্র দাখিলের শেষ সময়সীমা ছিল ১২ মে। এরপর ১৫ ও ১৬ মে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। আর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ২৬ মে।

এর আগে ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট সর্বশেষ এ চার সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার চার সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার হয়।

এর আগে নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, এবার চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নিরাপত্তা রক্ষায় ১১৮টি মোবাইল টিম ও ৪০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত রাখা হয়।

এ ছাড়া চার সিটিতে ২১ প্লাটুন বিজিবি ও খুলনা এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনে পাঁচ প্লাটুন কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়।

চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে ৯১ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) দায়িত্ব পালন করেন।

নির্বাচন চলাকালে সংঘটিত অপরাধের তাৎক্ষণিক বিচারের জন্য প্রতিটি সিটি কর্পোরেশন এলাকায় পাঁচজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়।

এ ছাড়া নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ, এপিবিএন, র‌্যাব, কোস্টগার্ড ব্যাটালিয়ন, আনসার ও বিজিবিও মোতায়েন করা হয়।

প্রতি ওয়ার্ডের জন্য একটি মোবাইল ফোর্স ও তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত রাখা হয়।

শনিবারের ভোটগ্রহণের জন্য এক লাখ বিশ হাজার ৮০ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে নিবিড় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছয়শ ৫৩ জন প্রিজাইডিং অফিসার, তিন হাজার আটশ নয় জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং সাত হাজার ছয়শ ১৮ জন পোলিং অফিসার।

ভোটাররা যাতে করে মোবাইল ফোনে এসএমএস-এর মাধ্যমে তাদের ভোটার নম্বর ও ভোটকেন্দ্রের নাম জানতে পারেন, সে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ভোটকেন্দ্রগুলোকে ঝুঁকি বিবেচনা করে ‘সাধারণ’ ও ‘গুরুত্বপূর্ণ’ এই দুইভাগে ভাগ করা হয় এবং সে অনুযায়ী নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।

সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রে ২৪ জন করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন ছিল।

ভোটগ্রহণের পরবর্তী দুইদিন, ভোটগ্রহণের দিন এবং ভোটগ্রহণের পরবর্তী দুই দিনসহ মোট চার দিন ভোটকেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র, সংরক্ষিত আসনে কমিশনার এবং সাধারণ আসনে কমিশনার পদে মোট সাতশ ৫০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

এদিকে, নির্বাচন উপলক্ষে চার সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শনিবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০১২৩ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৩

ঢাকা জার্নাল, জুন ১৬, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.