রাজশাহীতে গুলিবিদ্ধ পুলিশ, বগুড়ায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ
ঢাকা জার্নাল: গেজেট সংশোধন এবং ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি ও প্রশিক্ষণের ভাতা বাড়ানোর দুই দফা দাবিতে আজ সোমবার সকাল থেকেই বগুড়া ও রাজশাহী সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন।এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।এতে পুলিশসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।রাজশাহীতে এক পুলিশ গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলেও জানা গেছে।বগুড়া ও রাজশাহী থেকে ৩০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রাজশাহী: আজ বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা পুলিশের একটি মোটরসাইকেল ও কলেজের আসবাব বাইরে নিয়ে এসে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন।পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে ক্যাম্পাসের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা রাজশাহী-নওগাঁ সড়কে অবস্থান নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুড়লে পুলিশও পাল্টা লাঠিপেটা ও রাবার বুলেট ছোড়ে।এতে এনামুল হক নামের এক পুলিশ কনস্টেবল গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ২৬ শিক্ষার্থীকে আটক করেছে।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা পুলিশের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছেন এবং ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন।এ কারণে বাধ্য হয়ে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেছে।এই আন্দোলনে শিবির নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের ছোড়া গুলিতেই পুলিশ কনস্টেবল গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
গাড়ি ভাঙচুর করার সময় দুই শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবিটি বগুড়া-শেরপুর সড়কের কলোনি এলাকা থেকে তোলা। ছবি: সোয়েল রানা, বগুড়াবগুড়া: আজ সকাল থেকে বগুড়া সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ শুরু করেছেন।তাঁরা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের গত দুই দিনের বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়ার ঠনঠনিয়ায় সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।এদিকে আজ সকাল ১০টা থেকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের নির্ধারিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু সকাল নয়টার দিকে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করেন এবং ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সাতমাথা-শেরপুর সড়ক অবরোধ করে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।পুলিশ বাধা দিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে।শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে পুলিশও পাল্টা রাবার বুলেট ছোড়ে।পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আশপাশের গলিতে ঢুকে যান।পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চার শিক্ষার্থীকে আটক করেছে।
এদিকে, গাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লাঠিসোঁটা নিয়ে পরিবহনশ্রমিকেরা রাস্তায় নামেন।তাঁরা এ সময় ‘আমার গাড়ি ভাঙল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’; ‘গাড়ি ভাঙচুরকারী সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙে দাও’ স্লোগান দেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ শহীদ আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ করবেন, এটি ধারণায় ছিল না।এই আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের ইন্ধন আছে।তবে এখন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে।ক্যাম্পাসের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রকৌশলীর সংজ্ঞায় ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অন্তর্ভুক্ত করে ২০০৮ সালের গেজেট সংশোধন এবং ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি ও প্রশিক্ষণ ভাতা বাড়ানোর দাবিতে সারা দেশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ৩০।