যেভাবে খালি করা হলো শাপলা চত্বর

মে ৭, ২০১৩

85_Hifajat+Rally_Paltan+Clash_050513ঢাকা জার্নাল: মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে সোমবার ভোররাতে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের হটিয়ে ঐ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সোমবার প্রথম প্রহরে হেফাজতের কর্মীদের সরিয়ে দিতে অভিযান শুরু করে র‍্যাব, পুলিশ ও বিজিবি’র যৌথ বাহিনী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতক্ষ্যদর্শী জানান, “রাত একটার দিকে তিন বাহিনীর হাজার হাজার সদস্য মিলে শাপলা চত্বরের দিকে এগোতে শুরু করেন। প্রথমে পুরো শাপলা চত্বরটি ঘিরে ফেলা হলো। তার পর সেখানে জড়ো হওয়া হাজার হাজার লোককে সরে যেতে বলা হয়।

“কিন্তু প্রথমেই কেউ সরে যায়নি। পুলিশ এর পর শত শত রাউন্ড ফাঁকা গুলি এবং টিয়ার গ্যাস শেল ছুঁড়তে শুরু করে। সাউন্ড গ্রেনেডও ব্যবহার করা হয়। এর পরই ছত্রভঙ্গ হয়ে পালাতে শুরু করেন হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকরা” বলেন তিনি।

তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামীর অনেক কর্মীই মতিঝিল এলাকার বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নেন। ভোর বেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকেরা সেই শত শত হেফাজত কর্মীকে ওই সব ভবন থেকে নামিয়ে আনেন, এবং মতিঝিল এলাকা ছেড়ে চলে যেতে সহায়তা করেন।

প্রতক্ষ্যদর্শী বলেন, “ভোরবেলা অনেক হেফাজত-কর্মীকেই আমি মাথার উপর দু-হাত তুলে লাইন ধরে পুলিশের কর্ডনের মধ্যে দিয়ে ওই এলাকা ছেড়ে যেতে দেখেছি। এদের মধ্যে কিছু ছিলেন আহত, এবং তারা অন্যের সাহায্য নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন, এমনটাও দেখতে পেলাম।”

তিনি বলেন, শাপলা চত্বরের ভ্রাম্যমাণ মঞ্চটি তখন পুলিশের দখলে। হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের হটিয়ে দেবার পর এই মঞ্চের কাছেই একটি ভ্যানের ওপর কাফনের কাপড় এবং পলিথিন দিয়ে মোড়ানো চারটি মৃতদেহ পাওয়া যায়। আমরা কয়েকজন মৃতদেহগুলো দেখেছি।”

কিন্তু তাদের পরিচয় এবং কিভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে সেসম্পর্কে পুলিশ বা চলে যেতে থাকা হেফাজতের কর্মীরাও কিছু বলতে পারে নি – যোগ করেন তিনি।

আরেক প্রতক্ষ্যদর্শী জানান, ভোর পর্যন্তও শাপলা চত্বরে কয়েক হাজার পুলিশ র‍্যাব ও বিজিবি সদস্য অবস্থান করছিলেন এবং তারা মাঝে মাঝে ফাঁকা গুলি করছিলেন।

তিনি জানান, পুরো মতিঝিল এলাকার পরিবেশটা একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার মতোই লাগছিল, গতকাল সারাদিনের সহিংস বিক্ষোভের অনেক চিহ্ন আশপাশে ছড়িয়ে ছিল। এসময় পুলিশ ও সাংবাদিকের গাড়ি ছাড়া আর কোন যান বা লোকজনের চলাচল ছিল না।

তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শাপলা চত্বর খালি করার সময় কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

কেন তাদের গ্রেফতার করা হলোনা এমন প্রশ্নে এ অভিযানে অংশগ্রহণকারী র‍্যাব কর্মকর্তা লে: কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, “তাদেরকে গ্রেফতার করা যেতো, কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম যে যার বাড়ি চলে যাক। সে কারণেই আমরা শক্ত অবস্থান নেই নি।”

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.