মৃত্যুর আগেও নিজের ‘খুনি’ ছেলেকে বাঁচিয়ে গেলেন মা

নভেম্বর ৭, ২০১৫

11ঢাকা : রাজধানীর মিরপুরের বড়বাগ এলাকায় ডাকাতি নয়, ছেলের ছুরিকাঘাতেই মারা গেছে মা রেহানা আক্তার (৪০)। দুইদিন আগে বাসায় ছুরিকাঘাতে আহত হন তিনি। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ওসি মাহবুব হাসান   বলেন, ‘মায়ের আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়ে ছেলেই তাকে ছুরি মেরে হত্যা করে বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার পর ওই নারী দাবি করেছিলেন, ঘটনার রাতে তার বাসায় একদল ডাকাত প্রবেশ করেছিল। মালামাল লুটের সময় বাধা পেয়ে ডাকাতরা তাকে ছুরি মেরে পালিয়ে যায়।’

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গত সোমবার রাত দেড়টার দিকে ৬৮ নম্বর বড়বাগ এলাকার বাসায় ছুরিকাঘাতে আহত হন রেহানা আক্তার নামে ওই গৃহবধূ। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মিরপুরের গ্যালাক্সি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সবশেষে ওইদিন ভোরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে আইসিইউতে মারা যান তিনি।

মিরপুর মডেল থানার ওসি মাহবুব হাসান আরো বলেন, ‘ঘটনার পর নিহত রেহানা আক্তার বিষয়টি আমাদের কাছে গোপন করেছিলেন। কিন্তু তদন্তের শুরু থেকেই তার কথার কোনো সত্যতা মিলছিল না। মারা যাওয়ার পর ওই নারীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে ছেলের ছুরিকাঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে।’

ওসি বলেন, ‘তবে ছেলের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়নি সে মাকে খুন করছে। তার সঙ্গে কথা বলে ও খোঁজখবর নিয়ে মনে হয়নি সে মাদকাসক্ত। ঠণ্ডা প্রকৃতির ও তার ভদ্র আচরণ দেখেও মনে করার উপায় নেই যে, সে মাকে খুন করতে পারে। ছেলেটি মিরপুরের কমার্স কলেজে বি.কম-এ লেখাপড়া করে। তবে পরিবারের লোকজন ও ঘটনার পর থেকে তদন্তের এ পর্যায়ে মনে হয়েছে ওই ছেলেটিই মায়ের খুনি। ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

এদিকে পারিবারের লোকজন পুলিশকে জানিয়েছে, নিহত রেহানা আক্তার স্বামী মতিউর রহমানের সঙ্গে ৬৮ নম্বর বড়বাগের চারতলা বাসার দ্বিতীয় তলায় থাকতেন। ঘটনার রাতে তার স্বামী বাসায় ছিলেন না। মা ও ছেলে বাসায় ছিল। ওই রাতে তাদের বাসায় ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.