মালালাকে হাসিনা: তোমার কণ্ঠেই প্রতিধ্বনিত আমার কণ্ঠস্বর
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: শিক্ষিত সমাজ ছাড়া বিশ্বকে নতুন ধারায় গড়া সম্ভব হবে না। বিশ্বের দেশে দেশে এখন প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষা। বিশ্বনেতারা বুধবার শিক্ষার জন্য সমবেত হয়েছেন। শিক্ষার পক্ষে তারা একত্রিত হয়েছেন। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে একমত হয়েছেন।
এই ফোরামে বারবারই উচ্চারিত হয়েছে বাংলাদেশের নাম। বক্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রেফার করেছেন। তারা বাংলাদেশে নারী শিক্ষার অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন।
এই ফোরামে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন মালালা ইউসুফ জাই। নারী শিক্ষার পক্ষে, নারী অধিকারের পক্ষে মালালার জ্বালাময়ী বক্তৃতা বিশ্ব নেতাদের মুগ্ধ করেছে, তাদের ভাষায় অনুপ্রাণিত করেছে।
জাতিসংঘ সদর দফতরে ইকোসক চেম্বারে এই ইভেন্টে বিশ্ব নেতাদের অংশগ্রহণ ছিলো অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও গুরুত্ববহ।
মানবতাবাদী বিশ্ব নেতা ডেসমন্ড টুটু, জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী ল্যাঙ ল্যাঙসহ অনেকেই অংশ নিয়ে এই কর্মসূচিতে কথা বলেন। ডেসমন্ড টুটু অস্ত্রের পেছনে নয়, শিক্ষার পিছনে অর্থব্যয়ের আহ্বান জানান বিশ্বনেতাদের কাছে। মালালা নারীমুক্তির জন্য শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে বলেন, মেয়েরা জন্মনিলে তারা বাবার অধীনে থাকে, বিয়ে হলে স্বামীর অধিনে থাকে, আর সন্তান বড় হলে তার কথা মেনে চলতে হয়। এটাই নারীর জীবন। আমরা এই জীবন থেকে নারীর মুক্তি চাই। বিশ্বের প্রতিটি শিশুকে আমি শিক্ষিত দেখতে চাই। আমি জানি আজকে যেটি স্বপ্ন তা আগামী দিনের বাস্তবতা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালালার বক্তৃতার সঙ্গে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, মালালার কণ্ঠেই ধ্বনিত হলো আমার বক্তব্য, মালালাই আমাদের কণ্ঠস্বর।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাহীন নারীর ভোগান্তি আমি জানি।
বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর অস্ত্র অস্ত্র খেলা নয়, এবার আসুন আমরা শিক্ষার ওপর জোর দেই। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করি।
বাংলাদেশে শিক্ষা উন্নয়নে প্রধান পাঁচটি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান অর্থনৈতিক শক্তি, অবকামামোগত উন্নয়ন, আধুনিক শিক্ষাক্রম, ডিজিটাল বৈষম্যের মাঝেও তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কিভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বিশ্ব নেতাদের প্রতিশ্রুতিতে উঠে আসে মানসম্মত শিক্ষার বিষয়টি।
শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েও একই কথা বলেন। বিশ্ব নেতাদের প্রতি শিক্ষার পক্ষে আরো জোরদার ভূমিকার আহ্বান জানান তিনি।
বক্তৃতায় মালালা তার অনুপ্রেরণা হিসেবে ডেসমন্ড টুটুর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথাও উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে মালালাকে জড়িয়ে ধরে কপালে আশীর্বাদের চুমু খান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় একটি আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
লিখেছেন, মাহমুদ মেনন ও শিহাবউদ্দীন কিসলু
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন মিডিয়া সেন্টার থেকে।
সৌজন্যে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৩