বিস্কুট আর পানি খেয়ে ১৭দিন বেঁচেছিলেন রেশমা

মে ১৩, ২০১৩

0,,16803520_303,00ঢাকা জার্নাল: সাভারে রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে ১৭ দিন ধরে বেঁচে থাকার পর বিশ্বজুড়ে যে তরুণী বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন, সেই রেশমা সোমবার সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সামনে তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন।

শারীরিক ও মানসিকভাবে বেশ দুর্বল রেশমা কিছুটা সময় নেন তার কথাগুলো বলতে। তারপরেও খুব একটা গুছিয়ে বলতে পারছিলেন না তিনি। তার সাথে উপস্থিত সেনা কর্মকর্তাদের এসময় তাকে সাহায্য করতে হয়েছে।

রেশমা বলেন, “ঘটনার দিন তিনি অন্যান্য দিনের মতো সকালে কাজে আসেন। কিন্তু তার আধা ঘণ্টা পর হঠাৎ করে বিকট শব্দ এবং কিছু বুঝে উঠার আগেই তার মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান তিনি। ” এর পরে কি ঘটেছিল তিনি মনে করতে পারেন না।

তিনি বলেন, “অনেক পরে শুধু বুঝতে পারেন যে চারিদিকে শুধু অন্ধকার আর মানুষের আর্তনাদ। উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করলে বুঝতে পারেন ঘরের ছাদ তার থেকে এক হাতেরও কম দূরত্বে। তার সাথে সেখানে আটকা পরে ছিলেন অনেকেই। প্রত্যেকেরই বাঁচার আকুতি।”

রেশমা বলেন, ‘তার সাথে যারা ছিলেন তারা সবাই মারা যান। কিন্তু তিনি হামাগুড়ি দিয়ে কিছু ইট সরিয়ে অপেক্ষাকৃত একটা ফাঁকা স্থানে আসেন। সেখানে কিছু বিস্কুট ও পানি খেয়ে তিনি পার করেন ১৭টি দিন।’

উদ্ধারের দিন তিনি বাইরে মানুষের গলার শব্দ শুনে আকুতি জানান তাকে উদ্ধারের, এমনটাই বলেন রেশমা।

তিনি বলেন, সেসময় তার পোশাক এতোটাই ছেড়া ছিলো যে সেটা গায়ে দিয়ে বাইরে আসার উপযোগী ছিল না। উদ্ধারকর্মীরা তাকে ছোট একটা টর্চ লাইট দেন। টর্চের আলোয় আবিষ্কার করেন তিনি যেখানে আটকে আছেন সেটি একটি পোশাকের দোকান। সেখান থেকেই একটা কাপড় পরে নেন তিনি।

রেশমা বলছিলেন, তিনি কখনো কল্পনাই করেননি যে বেঁচে যাবেন বা উদ্ধার পাবেন। এজন্যে সব সময় তিনি প্রার্থনাও করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে রেশমা কথা বলছিলেন খুব ধীরে এবং তার স্বর খুব ক্ষীণ শোনা যাচ্ছিল।

রেশমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল সুস্থ হওয়ার পর তিনি করতে চান ? কিছুটা সময় চুপ থেকে তিনি বলেন, অন্তত পোশাক কারখানায় আর কাজ করতে চাননা তিনি।

রেশমার চিকিৎসায় যে সাত সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে তার প্রধান কর্নেল মো. আজিজুর রহমান জানান রেশমার শারীরিক অবস্থা বেশ দুর্বল তাই তাকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট বা আইসিইউতে রাখা হচ্ছে।

তবে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। খুব শীঘ্রই তাকে হাসপাতালের ওয়ার্ডে স্থান্ততর করা হবে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.