নির্বাচনী রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ালেন লতিফ সিদ্দিকী

জুন ১১, ২০১৩

banglabarta_20130224110037ঢাকা জার্নাল: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী নির্বাচনের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, “আমার এই বক্তৃতাই বাজেটের ওপর শেষ বক্তৃতা। কারণ আমি আর পরবর্তী কোন নির্বাচনে অংশ নেব না।”

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাজের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।

আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “১৯৭০ থেকে আজকে ২০১৩ পর্যন্ত আমি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছি। আজকের এই দিনে আনন্দের সাথে দৃঢ় চিত্তে বঙ্গবন্ধু, চার জাতীয় নেতা ও গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার রক্ষার সব আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি বিনয়ের সাথে ঘোষণা করছি, বাজেট বক্তৃতায় সংসদীয় জীবনে এইটই আমার শেষ বক্তৃতা। কারণ আমার আর কখনই সংসদীয় রাজনীতিতে অর্থাৎ নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করবো না।”

তিনি বলেন, “দলীয় রাজনীতিতে যতদিন আমার নেতা শেখ হাসিনা আমাকে প্রয়োজন বোধ করবেন, যেভাবে কাজ করার নির্দেশ দেবেন, জনগণের স্বার্থে যে কোন অপরাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে আমি আমার জীবন দিয়ে সেই কাজটিই সম্পন্ন করবো। তাই আজকের শেখ বক্তৃতায় আমি আপনার কাছে সময় প্রার্থনা করবোনা। কারণ আমি জনগণ ছাড়া অপার্থিব-পার্থিব কোন শক্তির কাছে কিছু প্রর্থনা করিনি।”

আব্দুল লতিফ বলেন, “আমি প্রার্থনা করেছি জনগণের কাছে। তোমরা আমাকে সমর্থন কর, সহযোগিতা কর। আমি তোমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে লড়াই করে তোমার জাতিগত স্বত্তাকে বুটের তলার পিষ্ঠ থেকে মুক্ত করবো।”

স্পিকারকে উদ্দেশ্যে করে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “হতাশা, যন্ত্রণা নিয়ে নয়, দু:খের সঙ্গে নয়, আনন্দের সঙ্গে আমার সংসদীয় রাজনীতির পরিসমাপ্তি ঘোষণার মাহেন্দক্ষণে আমার চেয়ে সুখি ব্যক্তি আর কেউ নেই।”

আব্দুল লতিফ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী জনগণের রায় পেয়ে তার মন্ত্রিসভায় আমাকে স্থান দিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এক সময় বাঙ্গালীর সোনালী আঁশ ছিল, সেই পাট ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।”

ইতিহাস তুলে না ধরার কথা উল্লেখ করে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, “ যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বা চৈতন্যের অনুশীলন বা চর্চা করলে সংসদীয় রাজনীতিতে পরমতসহিঞ্চুতার জন্ম হয়, সেই পরমতসহিঞ্চুনতার জন্মের কসরত, প্রচেষ্টা আমাদের নেই।”

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের সেই চৈতন্য মুখ থবিড়ে পড়ে। আমাদের স্বাধীনতার মর্মবাণী বুট পিষ্ঠ হয়। তার পর থেকে যে ধারা চলে আসছে সে ধারা হল ক্ষমতার ধারা। ক্ষমতার গুণকির্তণ, ক্ষমতার সংকির্তন।”

সংসদীয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর এই ঘোষণার পর বাজেট নিয়ে আলোচনা শুরু করেন আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।

প্রসঙ্গত: আবদুল লতিফ সিদ্দিকী সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য ছাড়াও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য।

ঢাকা জার্নাল, জুন ১১, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.