নাম না জানা মেয়েটি

মার্চ ২৬, ২০১৩

muktizuddho-hilali-Bg20130325020848এক.

“ওই মেয়েটিকে আমি কোনো দিনই ভুলতে পারি না। ওঁর জন্য কোনো কিছুই আমরা করতে পারিনি, কিন্তু ওঁ আমাদের দশজন মুক্তিযোদ্ধার জীবন বাঁচিয়েছিল। ছিপছিপে গড়ন, বড়ো বড়ো চোখ, খাড়া নাক, রঙটা কালো। হলদে রঙের নতুন কাপড় পরে কাছারি ঘরের দুয়ারে এসে দাঁড়ালো। আমরা দশজন তখন পাটালি গুড় দিয়ে মুড়ি খাচ্ছি। মেয়েটির দিকে তাকিয়ে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হুরমুর ক’রে বলে গেলো- ‘আমার শ্বশুর রাজাকার। আপনেগরে মুড়ি খাইবার দিয়া মেলেটারিক খবর দিবার গ্যাছে। আপনেরা পলান।’ তখন আমরা সবাই উঠে পড়লাম। ও আবার বললো- ‘মুড়ি গামছায় বাইন্দ্যা নিয়া যান। পরে খায়েন।’ আমরা পাতিল থেকে যার যার গামছায় মুড়ি নিয়ে বের হলাম। ওঁ আবার বললো- ‘কানচির কাছ দিয়া যান। আইসেন আমি দেখায়া দেই।’ আমরা মেয়েটির সাথে বাড়ির ভিতর দিয়ে পিছন দিকে চলে গেলাম। সেখানে বেতের ঝোপের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেলাম। আমরা এই দশজন মুক্তিযোদ্ধা তিনদিন না খাওয়া অবস্থায় ছিলাম। ক্ষুধার জ্বালায় এই বাড়িতে গিয়ে খাবার চেয়েছিলাম। পরে বুঝতে পারলাম আমাদের এমন বোকামি করা একটুও ঠিক হয় নি। স্বাধীনতা পাওয়ার পর একদিন ঐ গ্রামে গিয়েছিলাম। ইচ্ছে ছিল ঐ মেয়েটির সাথে দেখা করবো। কিন্তু গ্রামে গিয়ে একজনের কাছে শুনলাম আমাদেরকে বাঁচানোর অপরাধে মেয়েটিকে ওঁর শ্বশুর পাকিস্তানি আর্মিদের হাতে তুলে দেয়। ওঁকে আর কখনোই পাওয়া যায় নি। মনে হলো ওঁর শ্বশুরকে গুলি করে উড়িয়ে দেই। কিন্তু ততদিনে বঙ্গবন্ধু সাধারণক্ষমা ঘোষণা করেছেন। বুকের মধ্যে কেমন একটা হাহাকার নিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম।”

ডায়েরির এইখানে এসে পড়া বন্ধ করলো নদী। নদীর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। এখন নদী কার জন্য কাঁদছে ঠিক জানে না- ওই মেয়েটির জন্য, না বাবার জন্য। এই ঘটনা নদী বাবার কাছে অনেকবার শুনেছে। শুনেছে আরো কত কত ঘটনা। মেঘালয়ে গিয়ে ট্রেনিং নেওয়ার কথা, যুদ্ধের কথা। এই সব টুকরো টুকরো কথাই লেখা রয়েছে ডায়েরিতে। বাবার অনিয়মিত ডায়েরি। ছোট ছোট অনুভূতির কথা। বাবা ছেড়ে গেছেন কত বছর, মনে হয় এইমাত্র ঘটে যাওয়া ঘটনা। নদী ডায়েরিটা তুলে রাখে। অনেক রাত হয়েছে। ঘড়িতে তিনটা বাজার ঘন্টা বাজে। আর দেরি করা ঠিক হবে না। কালকে ন’টায় অফিস পৌঁছাতে হবে। পাঁচ/ দশ মিনিট দেরি হলেই কথা শুনতে হয়। অ্যাডভার্টাইজিং এজেন্সিতে চাকরি করে ও। প্রাইভেট চাকরির এই এক জ্বালা। একদিনও মাপ নাই। এ সময় ওর বাবার উপর অভিমান হয় খুব। মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেটটা থাকলে হয়তো বিসিএস-এ হতো। জীবনটা অন্যভাবে চলতো। আবার মনে করে কী জানি হয়তো এই ভালো। যেমন চলছে চলুক। বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু সার্টিফিকেট নেন নি। তিনি বলতেন, “দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, তার জন্য সার্টিফিকেট কী দরকার।” না শেষ পর্যন্তও তিনি সার্টিফিকেট নেন নি। এ জন্য তিনি কোনো সম্মানও পান নি। কী আশ্চর্য! একজন মানুষ যুদ্ধ করেছেন কিন্তু সার্টিফিকেট নেন নি, তাই তাঁর কোনো সম্মান নেই। নদীর মনে হয় কাগজের এত সম্মান, মানুষের নেই! নিজের অজান্তেই ওর দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। এমনি নিজে নিজে কথা বলতে বলতে ও লেপের ভিতরে ঢুকে যায়। ওর খুব জানতে ইচ্ছে করে ওই মেয়েটির কী হয়েছিল শেষ পর্যন্ত। বেঁচে আছেন, নাকি মারা গেছেন; ক্যাম্প থেকে ছাড়া পেয়ে কি নিজের মায়ের বাড়িও যান নি তিনি; নাকি ক্যাম্পেই সুইসাইড করেছেন; অথবা এমনও তো হতে পারে মেয়েটি এখনো বেঁচে আছেন। কিংবা পাগল হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। নদীর অস্থির লাগে। এপাশ ওপাশ করে, কিন্তু ঘুম ধরে না। কেন যেন ওর মনে হয় ঢেঁকি পাড়ানোর শব্দ হচ্ছে। আগে যখন ও খুব ছোট ছিলো, তখন ফাইনাল পরীক্ষার পর ডিসেম্বর মাসে দাদাবাড়ি বেড়াতে যেতো। এ রকম তিনটার দিকে চাচি দাদি ফুফুরা ঢেঁকিতে আঁতপ চাল গুড়া করতেন। একজন বসতেন চুলার কাছে। পিঠার আয়োজনে। তখন নদীও উঠে চলে যেতো সেখানে। মা বকাবকি করলেও শুনতো না। নদী ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে বড় বড় ভাঁপা পিঠা ভেজে ধামায় রাখছে চাচি। নারকেল আর গুড়ের গন্ধে চারদিক মউমউ করছে। আস্তে আস্তে অন্ধকার কেটে যায়। গাছি এসে খেজুর রসের হাঁড়ি রাখে। দাদি চকচকে কাঁসার গ্লাসে রস ঢেলে নদীকে দেয়। নদী চাঁদরের ভিতর থেকে হাত বের করতেই ঠাণ্ডা বাতাসে কেঁপে ওঠে। জ্বেগে ওঠে নদী। দেখে উত্তর দিকের জানালার গ্লাসটা লাগানো হয় নি, হুহু করে বাতাস আসছে। বেলা প্রায় নটা বেজে গেছে। অফিস গেলেও দেড় ঘণ্টার মতো দেরি হয়ে যাবে। ওর মনে হয় আজ যাবেই না। কাল বেশ একটু খুনশুটি হয়ে গেছে। তিনদিন দেরি করে এলে একদিনের বেতন কাটবে। নদী ঝটপট রেডি হয়। মা গিয়েছে ভাইয়ের বাসায়। আজ ও একাই আছে।

দুই.
নদী বাসে উঠে বসে। অফিসে না গিয়ে সে ঢাকার বাইরে যাচ্ছে। কাউকেই বলে নি- মাকেও না। অফিসের ফোনের ভয়ে ফোন বন্ধ করে দেয়। চাকরিটা বেশি কড়া বলে নিয়ম ভাঙার আনন্দও পাচ্ছে বেশ। চাকরি থাকে থাক, না থাকে না থাক। নিজের ইচ্ছের দাম সব সময়ই ওর আছে। মনের মতো মন মিলছে না বলে বিয়েও করছে না। আত্মসম্মানের কারণে ভাই ভাবির সাথে থাকে না। একসাথে থাকলে সমস্যা হবেই। তার চেয়ে দূরে দূরে থাকলে সম্পর্ক ভালো থাকবে। মাকে নিয়ে নদীর ছোট্ট সংসার। কিংবা নদীকে নিয়ে মায়ের ছোট্ট সংসার। যাই হোক একটা চাকরির জন্য এখন নিজের ইচ্ছেটাকে মাটি করতে ইচ্ছে হচ্ছে না। এ কথা ভেবে আবার একটু মনে মনে হেসেও ওঠে। চাকরিটাই তো খাওয়াপরা দিচ্ছে। চাকরিটাই তো নিজের মতো করে থাকতে দিচ্ছে; হারালে চলবেই বা কেন। কিন্তু এত বিধিনিষেধ ভালোও লাগে না। যাই হোক একদিনের জন্য নিশ্চয়ই চাকরি চলে যাবে না। নদী পথের দিকে মন দেয়। বাস সাভার পার হয়ে যায়। অনেক দিন পর নদী উত্তরবঙ্গে যাচ্ছে। প্রায় পাঁচ বছর। শাহজাদপুরে ওদের গ্রামের বাড়ি। এবার অবশ্য ও শাহজাদপুরে যাবে না। উল্লাপাড়ার পরই নামবে। বাড়িতে যাচ্ছে না। যাচ্ছে যা মনে হয়েছে তাই করতে। ঘুম ঘুম লাগে ওর। কিন্তু জার্নিতে ও ঘুমায় না রাস্তার ধারের সব কিছু দেখতেই বেশি ভালো লাগে। বাস এখন যমুনার উপরে। বাবা বলেছিলেন যুদ্ধের সময় এ নদীতে বহুবার জেলেদের নৌকায় যাতায়াত করেছেন। বাবা যেদিন রাতে এ পৃথিবী থেকে চলে গেলেন সেদিন এই ব্রিজের উপর দিয়েই বাস ছুটে চলছিলো ঢাকার দিকে। বাবাকে নিয়ে নদী আর মা চলছিলো ডাক্তার দেখাতে। না ডাক্তার কিছুই করতে পারে নি। সেদিন বাবা যমুনার দিকে বারবার তাকাচ্ছিলেন। কেন ওরকম তৃষিতের মতো তাকাচ্ছিলেন নদী আজও বুঝতে পারে না। হয় তো পুরোনো স্মৃতি উঁকি দিচ্ছিলো। আর শোনা হলো না। কোনো দিনও শোনা যাবে না। নদীর খুব কষ্ট হয়। চোখে পানিও আসে, কিন্তু গাড়িতে কি আর কাঁদা যায়। কষ্ট করে কান্না চেপে রাখে। কড্ডার মোড় পার হয় গাড়ি। নদী চিন্তা করে, উল্লাপাড়া আর শাহজাদপুরের মাঝামাঝি কোথাও গ্রামটি হবে হয়তো। একটু চিন্তায় পড়ে নদী। ডায়েরিতে বাবা গ্রামের নামটি লেখেন নি। মুখে বলেছিলেন, যতদূর মনে পড়ে গারাদহ নাম। ওর ভাবনায় উঁকি দেয়, লোকটি বেঁচে আছে তো? মানুষ তো মুক্তিযোদ্ধাদের দেখতে যায়, নদী যাচ্ছে রাজাকার দেখতে। ওর বাবার যে রাজাকারকে গুলি করে উড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করেছিলো সেই রাজাকার দেখতে। এ প্রজন্মের অনেক মানুষই তো জানে না ঐ লোক রাজাকার ছিলো। নদী গিয়ে সবার সামনে লোকটিকে মেলে ধরবে। বলবে কুকীর্তির কথা। মানুষকে তার কর্মফল ভোগ করতেই হবে। ছেড়ে দিলে চলবে না। এদের জন্যই দেশটা অসুন্দর হয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকার দুই চেতনার মিশেল হয়ে গেছে দেশে। এভাবে মূল্যবোধ গড়ে ওঠে না; উন্নতি সম্ভব না। নদীর মাথাটা টনটন করে ওঠে। এই দেশটার জন্য এতগুলো মানুষ জীবন দিলো অথচ, দেশটার কী বেহাল অবস্থা। গাড়ি সিরাজগঞ্জ রোড থেকে বাম দিকে ঢোকে। নদী মনে মনে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তালগাছি আসার সাথে সাথেই নেমে পড়ে। নদী জানে এখানে ওদের অনেক আত্মীয়স্বজন আছে, কিন্তু সে সব বাড়িতে যাওয়ার চিন্তাও করে না। একটা টিস্টলে চায়ের অর্ডার দিয়ে বেঞ্চে বসে। একজন লোক খোঁজে যাকে বলা যায়। তবে নদী জানে যে, চেহারা দেখে কিছু বোঝা যায় না। বলে ফেলা উচিত। একজনের কাছ থেকে আরেকজন শুনবে, তারপর আরেকজন এভাবে এমন একজনের কাছে খবর পৌঁছাবে যেও মনে মনে এ ঘটনাটি বলতে চায়। কিন্তু বলতে পারে না। সেই রাজাকারটির সন্ধান দেবে। নদী তো এই চায় যে সবাই ঘটনাটি জানুক। এরপর থেকে সবাই ওকে ঘৃণা করুক। নদী তো লোকটির নামটাও জানে না। কীভাবে জানবে, বাবাও তো নাম জানতেন না। একজন বৃদ্ধ লোক কৌতুহলী হয়ে নদীকে দেখতে দেখতে বেঞ্চের অন্যমাথায় বসে। নদীর চা আসে। আরেকটি নদীর বয়সী ছেলে চা খাচ্ছে। নদী তাকেই পুরো ঘটনা বলবে বলে ঠিক করে। ছেলেটির সাথে পরিচিত হয়। ছেলেটির নাম নাহিদ। নাহিদকে বলতে শুরু করে ঘটনাটি। তবে চোখ রাখে বৃদ্ধ লোকটির উপর। নাহিদও নদীর মতো উত্তেজিত হয়। নদীর মনে হয় বৃদ্ধ লোকটি নড়েচড়ে বসে। কিছু বলতে চায়। নাহিদ এবার বৃদ্ধলোকটিকে জিজ্ঞাসা করে। লোকটি ওদের জানায়, ‘সেই রাজাকার তো কতবার মেম্বার হইলো। তাক কি কিছু কওয়ার উপায় আছে? কতকালের কথা।’ নদী জানতে পারে রাজাকারের নাম তবারক। বাড়ি গারাদহ। হ্যাঁ তবে এই লোকই হবে। এবার নাহিদ ওর সাথে যেতে চায়। নদী ওকে নেয় না; একা যাবে নদী। নদী পৌঁছে যায় গারাদহ। দু’একজনকে বলেও এই কাহিনী। প্রায় পুরো গ্রামেই ছড়িয়ে যায় কথা। অবশেষে নদী এসে ঢোকে তবারক মেম্বারের বাড়ি।

তিন.
নদী চিন্তা করে এ দায় কি মুক্তিযোদ্ধাদেরও ছিলো না? একটি খারাপ লোক দিনের পর দিন গ্রামে বাস করেছে, মেম্বার পর্যন্ত হয়েছে অথচ কেউ প্রতিবাদ করে নি। একটি ঘরে নদী বসে আছে। প্রায় এক ঘণ্টা হয়ে গেলো নির্ভরযোগ্য কেউ আসছে না। একজন দুজন এসে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে। এ ঘরে অনেক জৌলুস। মেম্বারের বৈঠকখানা বলে কথা। সবই বেশ মোটা দাগের জিনিস। সোফা ফুলদানি টিভি ফটোস্ট্যান্ড- টাকার ছাপ আছে রুচির না। নদীর সামনের দেওয়ালে বড় করে চুমকি আর ম্যাচের কাঠি দিয়ে নকশা করা কাপড় কাঁচের ফ্রেমে বাঁধানো। এ ঘরের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক জিনিসটি হলো ওর ডান দিকে দেওয়ালে একটা গিটার ঝুলছে। এই বেখাপ্পা জিনিসটা এখানে এলো কি করে নদী বুঝতে পারে না। এটাই হয়তো বাবার বলা কাছারি ঘর। নদীর একটু ভয় ভয় লাগে। কোনো বিপদে পড়বে না তো আবার। বাবার মতো। এই বাড়িতে এসেই তো তিনি বিপদে পড়েছিলেন। আবার ভরসাও পায়; অনেক লোক বাড়ির বাইরে জটলা করছে। একবার মনে হয় মোবাইলটা খুলে রাখবে। কিন্তু মোবাইল খুললেই অফিসের ফোন আসবে। ভাবনায় ছেদ ঘটিয়ে একজন বায়ান্ন/তিপ্পান্ন বছর বয়সী লোক ঘরে ঢোকে। সে বেশ জোড়ে ধমকে নদীকে বলে- ‘শোনো মেয়ে তুমি যে লোকের কথা বলতেছো, সে ধরনের কোনো লোক এ গ্রামে নাই। তুমি যাও।’ নদী উঠে দাঁড়ায়। লোকটির চোখের দিকে তাকিয়ে বলে- ‘আপনার স্ত্রীকেই তো আপনার বাবা…।’ নদী শেষ করার আগেই লোকটি গর্জে ওঠে- ‘তুমি সোজা এ গ্রাম থাইকা চইলা যাও। বাড়াবাড়ি কইরলে ফল ভালো হইবে না।’ এ সময় বেশ বয়স্ক একজন লোক ঘরে ঢোকে। লোকটি বয়সের ভারে অনেকটা কুঁজো হয়ে গেছে, দেখে নিরীহ মনে হচ্ছে। সমস্ত শরীরের মধ্যে চোখ দুটো বেশ জ্বলজ্বলে। সে এসে নদীর মুখোমুখি দাঁড়ায়। কোনো ভূমিকা ছাড়াই বলে- ‘আমি তবারক মেম্বার। তুমি যাক খুঁজবার আইছো, সে আমি। তোমার কিছু কওয়ার আছে?’ নদী লোকটিকে দেখে একটু অপ্রস্তুত হলো। যেমনটি ভেবেছিলো, তেমন নয়। কিন্তু চোখের দিকে তাকিয়ে নদী চমকে ওঠে। এ যেন খুনির চোখ। সাথে সাথেই বাবার কথা মনে হয়, ডায়েরির মেয়েটির কথা মনে হয়। লোকটি বিশ্রি করে হাসে। তারপর বলে- ‘আমার বউমাক পরথম বলাৎকার আমিই কইরছি, তারপর মেলেটারিক দিছি। বুইঝলা মা জননী।’ নদীর মাথার রক্ত টকবক করে ফুটে ওঠে যেন। কোনো চিন্তা না করেই হাত বাড়িয়ে গিটারটা হাতে নেয়, তারপর সজোড়ে লোকটির মাথায় আঘাত করে। মনে মনে বলে, বাবার ঋণশোধ করলাম।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.