দিন বদলের ৭ নভেম্বর

নভেম্বর ৭, ২০১৩

7-novemberঢাকা জার্নাল: আজ ৭ নভেম্বর। দিনটিকে আওয়ামী লীগ পালন করে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে। বিএনপি পালন করে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে। জাসদ পালন করছে ‘সৈনিক-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে। কর্নেল তাহের সংসদ দিনটি পালন করছে ‘সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে।

ঘটনাবহুল এ দিনের ইতিহাসে জড়িয়ে আছে রক্তপাতের ইতিহাস। কাউকে ঝুলতে হয়েছে ফাঁসিতে। প্রাণ দিতে হয়েছে হাজারো সৈনিককে। বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থানের সূচনা ঘটে। ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার মাত্র ৭৮ দিন পর সেই অশুভ শক্তিই ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ৪ নেতাকে। এ পেক্ষাপটে ৩ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর সামরিক বাহিনীর মধ্যে একাধিকবার অভ্যুত্থান-পাল্টাঅভ্যুত্থান ঘটে। এক পর্যায়ে জিয়াউর রহমান গৃহবন্দী হন। ওইসব ঘটনায় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা ও জওয়ানের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে।

জাসদসহ সমমনা সংগঠনগুলোর ব্যাখ্যা হচ্ছে- ‘৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর থেকে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে ক্ষমতালিপ্সু অফিসারদের ক্ষমতা দখল-পুনর্দখলের জন্য পরস্পরবিরোধী অবস্থানের প্রেক্ষাপটে ইতিহাসের এ দিনে সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান ঘটেছিল। বিএনপির মতে- ‘৭৫ সালের এই দিনে আধিপত্যবাদী শক্তির নীলনকশা প্রতিহত করে সিপাহি-জনতা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছিল। বন্দীদশা থেকে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেছিল। 

৬ ও ৭ নভেম্বর সংঘটিত অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহের। বন্দীদশা থেকে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেছিলেন তিনি। এরপর আবার সেনাপ্রধানের পদে আসীন হন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান প্রথমে উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পরে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদে বসেন। এক পর্যায়ে বিচারপতি আবু সা’দত মোহাম্মদ আবু সায়েমকে সরিয়ে রাষ্ট্রপতি হন তিনি। অন্যদিকে বন্দীদশা থেকে জিয়াকে মুক্ত করেও নিজে বাঁচতে পারেননি কর্নেল তাহের। দেশদ্রোহিতার অভিযোগে কোর্ট মার্শালের বিচারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু দেয়া হয় তাকে। জিয়াউর রহমান তখন ক্ষমতায়।

গত ৩৫ বছরে অধিকাংশ সময় দিনটি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস সরকারিভাবে পালিত হয়েছে । ‘৭৬ থেকে ‘৯৫ সাল পর্যন্ত সরকারি ছুটি ছিল। ‘৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তা বাতিল করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে ছুটি বহাল করে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে ছুটি আবার বাতিল করে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সে সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে।

দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি এক দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ উপলক্ষে বিশেষ বাণী দিয়েছেন বিএনপি।

ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ৭, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.