তুরস্কে বামপন্থী যুব সমাবেশে হামলায় নিহত ৩০

জুলাই ২৩, ২০১৫

1437395491সোমবার (২০শে জুলাই) তুরস্কের সুরুক শহরে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণে অন্তত ৩০জন নিহত ও ১০০-র বেশি আহত হয়েছেন। আইএস-এর সন্ত্রাসীরা এই আক্রমণ চালিয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে।

সিরিয়ার সীমান্তে সুরুক শহরের আমারা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বামপন্থী যুবসংগঠনের আহ্বানে সভা চলাকালীন সময়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ২০১৩-র মে মাসে রেহানলিতে বিস্ফোরণের পরে এটিই তুরস্কে সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ। যার শিকার হলেন বিভিন্ন বামপন্থী যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে বলা হচ্ছে, এক আত্মঘাতী মহিলা আইএস সন্ত্রাসী এই আক্রমণ চালিয়েছে।

তুরস্কের রাষ্ট্র ও প্রশাসন এ ঘটনার নিন্দা জানালেও গত চার বছরের বেশি সময় ধরে সিরিয়ায় সরকারবিরোধী সশস্ত্র শক্তি, জাবাত-উল-নুসরার মতো গোষ্ঠীগুলিকে মদদ জোগানোর নাম করে বাস্তবে সন্ত্রাসীদেরকেই সাহায্য করে যাচ্ছে তারা। এরই আড়ালে কাজ করে ঐ সব অঞ্চলে দিন দিন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে আইএস। সরকারের প্রশ্রয়েই দক্ষিণ তুরস্কের সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদীরা দলে দলে সিরিয়ায় ঢুকেছে। এমনকি এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করে বলেন, আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাবার পথে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছিল।

সিরিয়ার কুর্দি অধ্যুষিত শহর কোবানের ঠিক বিপরীতে সীমান্ত পেরিয়েই আনুমানিক ১০কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুরুক শহর। এ শহরে সিরিয়ার শরণার্থীদের বড় একটি শিবিরও রয়েছে। প্রায় ৩৩ হাজার শরণার্থী বর্তমানে অবস্থান করছেন সেখানে। সুরুকের অধিবাসীদেরও বড় অংশ কুর্দি। কোবানে শহরে আইএস-এর আক্রমণের বিরুদ্ধে যে তীব্র লড়াই চলছে, সে লড়াইয়ের প্রতি সংহতি জানাতেই ফেডারেশন অফ সোস্যালিস্ট ইউথ অ্যাসোসিয়েশন (এসজিডিএফ)-এর ডাকে এ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। বিভিন্ন বামপন্থী যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এতে উপস্থিত ছিলেন। ইস্তানবুল, আঙ্কারা, আন্তাকায়া থেকে আসা প্রতিনিধিরাও ছিলেন। স্থানীয় সময় দুপুর বারোটার একটু পরে সভার সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য যখন সাংবাদিক সম্মেলন হচ্ছিল তখনই বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণের মূল ধাক্কা লাগে কনভেনশন হলের ঠিক বাইরের প্রাঙ্গণে। টেলিভিশন ও সোস্যাল মিডিয়ায় পাঠানো বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, বিস্ফোরণের পর পরই ঘটনাস্থলে আগুন জ্বলতে থাকে, কর্মীদের রক্তাক্ত দেহ বাগানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণ খুবই শক্তিশালী ছিল। এতে সমগ্র এলাকা কেঁপে উঠেছিল। ঘটনার পর আহতদের উপস্থিত বিভিন্ন বেসরকারি গাড়ি ও এ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঐ সভায় উপস্থিত বেঁচে যাওয়া বামপন্থী যুব সংগঠন কর্মীদের কাছ থেকে জানা যায়, সভায় স্থির হয়েছিল কোবানে তে গিয়ে বিধ্বস্ত শহর পুনর্র্নিমাণের কাজে সাহায্য করা হবে। শিশুদের জন্য খেলনা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও জড়ো করা হয়েছিল। বিস্ফোণের পরে দেখা যায় সে সবও পড়ে আছে রক্তস্রোতের মধ্যে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.