জীবিতদের উদ্ধারে ভারি যন্ত্রপাতি ব্যবহার শুরু হচ্ছে

এপ্রিল ২৮, ২০১৩

goc-savar-bg20130427234039ঢাকা জার্নাল: সাভারে রানা প্লাজার ধবংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধারে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার শুরু করা হচ্ছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রথমে ভবনের ওপরের কংক্রিট সরানো হবে।পরে জীবিতদের সন্ধান করা হবে।

রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে উদ্ধারকর্মীদের সবাইকে সরিয়ে আনা হয়েছে। 

রোববার  সকালে উদ্ধার কাজে ভারী যন্ত্র ব্যবহার নিয়ে সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

বৈঠকে অংশ নেয় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, র‌্যাব, রেড ক্রিসেন্টসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।

বৈঠকের পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চৌধুরী হাসান সোহরাওয়ার্দী বলেন, উদ্ধার অভিযানে এ ক’দিন ম্যানুয়ালি, দেশপ্রেম, সাহস, দক্ষতা, শারীরিক শক্তিই ছিল মূল চালিকা শক্তি। এখন আমরা ম্যানুয়ালির পাশাপাশি কিছু প্রযুক্তির সহায়তা নিতে চাচ্ছি। যেখানে প্রাণের স্পন্দন অছে সেখানে আর ম্যানুয়ালি এগুনো সম্ভব নয়।কারণ উদ্ধারকর্মীরা ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। 

তিনি আরও বলেন, আমরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রযুক্তি ব্যবহারের।এ অভিযানে ক্রেনসহ রিকভারি ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হবে। এটা অত্যন্ত কঠিন একটি প্রক্রিয়া। সকল উদ্ধারকর্মীকে এরই মধ্যে বের করে আনা হয়েছে। উপর থেকে হাইড্রোলিক ক্রেন ব্যবহার করে দক্ষতার সাথে কাজ করা হবে।এতে সময় কম লাগবে।এটা জীবিতদের উদ্ধারে ইকুয়েপমেন্টের ব্যবহার। এখানে ভূল বোঝার অবকাশ নেই।

এ কাজে যুক্ত থাকবেন সেনাবাহিনীর স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ফায়ার সার্ভিস। বাইরে থেকে সহযোগিতা করবে বিমান বাহিনী, পুলিশ, ৠাবসহ স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এছাড়া ডিসিসি, বেক্সিমকো, আনন্দ শিপইয়ার্ডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও সম্পৃত্ত থাকছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৯টার দিকে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামে বহুতল ভবনটি ধসে পড়ে। রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত এ ঘটনায় ৩৬২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

এর মধ্যে ৩৪৮ জনের লাশ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য লাশগুলো হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে।

এছাড়া শনিবার ৪৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট জীবিত উদ্ধারের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ হাজার ৪শ ৭৫ জনে।

আহতদের এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ আশপাশের অন্য হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, সিএমএইচ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সাভার পৌর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানার মালিকানাধীন এই ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ইলেকট্রনিক্স, কম্পিউটার, প্রসাধন সামগ্রী ও পোশাকের দোকান ছিল।

ভবনটির তৃতীয় তলা থেকে ওপর পর্যন্ত কয়েকটি গার্মেন্টস কারখানা ছিল। এগুলো হলো-নিউ ওয়েভ বটমস লিমিটেড, নিউ ওয়েভ স্টাইল, নিউ ওয়েভ অ্যাপারেলস, ফ্যান্টম অ্যাপারেলস লিমিটেড, ফ্যান্টম ট্যাক লিমিটেড ও ইথার টেক্সটাইল লিমিটেড।

ছয় তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি নিয়ে নয় তলা ভবন তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এর আগে গত নভেম্বর মাসে সাভারের আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক পোশাক শ্রমিকের প্রাণহানি হয়।

ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ২৮, ২০১৩

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.