জিডি না নিয়ে বিদেশ যেতে বলেছিল পুলিশ

আগস্ট ৭, ২০১৫

Niloyঢাকা জার্নাল: ব্লগার ও গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী নিলয় নীলকে (৪০) হত্যা করা হতে পারে এটা তিনি আগেই আশঙ্কা করেছিলেন। গত ১৫ মে বেলা ১১টা ২৬ মিনিটে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে একটি পোস্ট দেন।

এতে লেখা ছিল, “আমাকে দুজন মানুষ অনুসরণ করেছে গত পরশু। ‘অনন্ত বিজয় দাশ হত্যার’ প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে যোগদান শেষে আমার গন্তব্যে আসার পথে এই অনুসরণটা করা হয়। প্রথমে পাবলিক বাসে চড়ে একটা নির্ধারিত স্থানে আসলে তারাও আমার সাথে একই বাসে আসে। এরপর আমি লেগুনায় উঠে আমার গন্তব্যস্থলে যাওয়া শুরু করলে তাদের মধ্যে একজন আমার সাথে লেগুনায় উঠে। লেগুনায় বসে আমার মনে পড়ে বাসে তো এই ব্যক্তিই ছিল কিন্তু তারা তো দুইজন ছিল। মনে মনে ভাবি হতেই পারে, একজনের গন্তব্য অন্যদিক তাই চলে গেছে।’

“এ পর্যন্ত ব্যপার স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে লেগুনায় বসে সেই যুবক ক্রমাগত মোবাইলে টেক্সট করছিল যা দেখে আমার সন্দেহ হয়। আমি আমার নির্ধারিত গন্তব্যস্থলের আগেই নেমে গেলে আমার সাথে সেই তরুণও নেমে পড়ে। আমি বেশ ভয় পেয়ে সেখানের একটি অপরিচিত গলিতে ঢুকে যাই। পরে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি ঐ তরুণের সাথে বাসে থাকা আরেক তরুণ এসে যোগ দিয়েছে এবং তারা আমাকে আর অনুসরণ না করে গলির মুখেই দাড়িয়ে আছে। তখন থেকে আমি নিশ্চিত হলাম যে আমাকে অনুসরণ করা হচ্ছে কারণ তাদের দুজনের গন্তব্য একই জায়গায় হলেও তারা ভিন্নভাবে এসেছিলো এবং আমাকে অনুসরণ করেছিল। আমি গলির আরও অনেক ভীতরে যেয়ে রিক্সা নিয়ে হুড ফেলে আমার গন্তব্যস্থলে যাই এবং পরে কাছের এক বন্ধুর সহযোগিতায় আপাত নিরাপদেরই পৌছাই”।

‘এই ঘটনায় জিডি করতে যেয়ে আরও উদ্ভট পরিস্থিতির সম্মুখীন হই। প্রথমেই এক পুলিশ অফিসার ব্যক্তিগতভাবে জানিয়েছিলো যে এই ধরণের জিডি পুলিশ নিতে চায় না কারণ ব্যক্তির নিরাপত্তা সংক্রন্ত ব্যপারে যে কর্মকর্তা জিডি গ্রহণ করবে তার একাউন্টেবেলিটি থাকবে সেই ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। আর যদি ঐ ব্যক্তির কোন সমস্যা হয়, সেইক্ষেত্রে ঐ পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার জন্য চাকুরী পর্যন্ত চলে যেতে পারে। থানায় জিডি করতে ঘুরেও একই চিত্র দেখলাম, অনুসরণকালে অনেকগুলো থানা অতিক্রম করার জন্য গতকাল ঘটনাস্থলের আওতায় থাকা একটি থানায় গেলে তারা জিডি নিলো না, তারা বললো আমাদের থানার অধীনে না, এটা অমুক থানার অধীনে পড়েছে ওখানে যেয়ে যোগাযোগ করুন, আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশ ছেড়ে চলে যান।’

শুক্রবার (০৭ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও থানার উত্তর গোড়ান এলাকার ১৬৭ নম্বর বাসার ৫ম তলার একটি ফ্ল্যাটে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আমরা আশপাশের লোকজনের কাছে শুনেছি দুপুর সোয়া ১টার দিকে ভাড়াটিয়া সেজে এক যুবক ওই বাসায় ঢোকেন। পরে তার পিছে পিছে ঢোকেন আরও তিনজন। তারাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে। স্থানীয় ও পরিচিত লোকজন বলছেন, নিলয় নীল নামে ব্লগে লেখালেখি করতেন। তবে আমরা বিষয়টি সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নই।

ঢাকা জার্নাল , আগস্ট ০৭, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.