গ্রামীণ ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে আসছে

অক্টোবর ৩, ২০১৩

Grameen-Bank-HQ-23-01-2013ঢাকা জার্নাল: গ্রামীণ ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে। গ্রামীণ ব্যাংক আইন ২০১৩ খসড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের রিটার্ন দাখিলসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া এবং ঋণের অর্থ আদায়ে মনিটরিংসহ আগের আইনটিকে সংশোধন করে আইনটির অনুমোন ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বৃহস্পতিবার গ্রামীণ ব্যাংক আইন ২০১৩-এর খসড়া অনুমোদনসহ আজ ১৪টি বিষয়ের মধ্যে ১০টির অনুমোদন, দুইটি পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত এবং দুইট বিষয় অবহিত করা হয় মন্ত্রিসভায়।

আজ প্রায় চার ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে। বৈঠকে গ্রামীণ ব্যাংকের আইনের খসড়া অনুমোদনে ব্যাংকের রিটার্ন প্রতিবেদন ও বিবরণী সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, সংশোধনী আনার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানো হলো কি না? এর উত্তরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে সুনির্দিষ্ট কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুরোটা নয়।

বৈঠকে গ্রামীণ ব্যাংকের আইনটি ইংরেজি থেকে বাংলা করা হয়েছে। এর আগে সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সরকারের মূল কাজ ছিল আইনটিকে বাংলা করা। আইনের খসড়ায় অনুমোদিত মূলধন বাড়ানো হয়েছে। আগে এই মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩৫০ কোটি টাকা। সেটা বাড়িয়ে এক হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিশোধিত মূলধন ছিল ৫০ কোটি টাকা। এটা বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। আগে আইনে পরিচালকের কার্যকাল ছিল না। অন্য আইনের সঙ্গে সংগতি রেখে পরিচালকের কার্যকাল তিন বছর করা হয়েছে। এ ছাড়া আইনে শাস্তিও বাড়ানো হয়। ঋণ পাওয়ার জন্য মিথ্যা তথ্য দিলে এক বছর পর্যন্ত সাজা ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আগে সাজার মেয়াদ ছিল এক বছর ও জরিমানা ছিল দুই হাজার টাকা। গ্রামীণ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো বিজ্ঞাপনে বা প্রসপেক্টাসে কেউ নাম ব্যবহার করলে এক বছর সাজা ও এক লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। আগে এই অপরাধের শাস্তির মেয়াদ ছিল ছয় মাস আর এক হাজার টাকা জরিমানা। তবে অনুমোদিত আইনে আগের মতোই আয়কর অব্যাহতির সুবিধা রাখা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আজ মোট ১৪টি বিবেচিত বিষয়ের (এজেন্ডা) অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে ইমারত নির্মাণের নকশা অনুমোদন বিষয়ক প্রস্তাবে সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ছুটির তালিকা অনুমোদন করা হয়। ২০১৪ সালে ১৪ দিন সাধারণ ছুটি ও আট দিন নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি রাখা হয়েছে। মোট ২২ দিন ছুটি থাকবে। প্রকৃত ছুটি পাওয়া যাবে ১৬ দিন।

মন্ত্রিসভায় ভোজ্য তেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ আইন ও যশোরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা কমিশন আইন ২০১৩-এর অনুমোদনও করা হয় সভায়।

এ ছাড়া আইনি সহায়তা প্রদান আইন ২০১৩ ও ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন ২০১৩-এর অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে টিসিবির খসড়ার নীতিগত অনুমোদনও দেওয়া হয়। টিসিবিকে শক্তিশালী করতে অনুমোদিত মূলধন পাঁচ কোটি টাকা থেকে ১০০ কোটি করা হয়েছে। জাতীয় রপ্তানি ট্রফি নীতিমালার খসড়াও অনুমোদন করা হয়েছে।
গত সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মন্ত্রিসভায় গ্রামীণ ব্যাংকের আইনটি অনুমোদিত হলে দ্রুততম সময়ে তা পাঠানো হবে জাতীয় সংসদে। আর সরকারের বর্তমান মেয়াদেই এটি পাস করানো হবে।

ঢাকা জার্নাল, অক্টোবর ৩, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.