অপেক্ষায় বাংলাদেশ, ফতুল্লায় ফিরবে মিরপুরের স্মৃতি!
ঢাকা জার্নাল: ২০১২ সালের ১৬ মার্চ ফাগুনের রাতকে উৎসবের আগুনে রাঙ্গিয়ে দিয়েছিল তামিম, সাকিব, মুশফিকরা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতকে নিয়ে রীতিমতো নাস্তাবুদ করেছিল তারা। বাংলাদেশের জয় শচীনের শততম সেঞ্চুরির আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছিল। আবারো দুই বছর পর এশিয়া কাপ। কিন্তু পরিস্থিতি এবার ভিন্ন । লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজ হার এবং মাঠের বাইরের নানান বিতর্কে বিধ্বস্ত মুশফিকরা।
এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন কোথায় টিম মিটিংয়ে রণ পরিকল্পনার ছক আকার কথা মুশফিকের, কিন্ত অনুশীলন শেষে বিসিবির ভারপ্রাপ্ত কার্যনিবাহী কর্মকর্তার ভাষায় অনানুষ্ঠানিক শুনানিতে হাজির হতে হয়েছে স্বাগতিক অধিনায়ককে। টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে সাকিবের অশোভন ইঙ্গিত, তামিম ইকবালের ইনজুরি সব মিলিয়ে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়া দলেরই প্রতিচ্ছবি।
কিন্তু এই দলটিই গত বছর দেড়েক ধরে বাঙ্গালিকে উৎসবে মাতিয়েছে। আবারো টিম বাংলাদেশের সামনে বড় উপলক্ষ্য। ক্রিকেট ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণে ক্রিকেটাররাই পারে গতিপথটাকে সাফল্যের রাস্তার দিকে ঘুরিয়ে দিতে।
মুশফিক বলেছেন একটি জয়ই সব ঠিক করে দেবে। সে জয়টা যদি বুধবার ভারতের বিপক্ষেই এসে যায় তাহলে আবারো কক্ষপথে ফিরবে বাংলাদেশের ক্রিকেট।
তবে বর্তমান ভারতীয় দলের শক্তি বিচার করলে কাজটা কঠিন হওয়ার কথা নয়। এই আত্মবিশ্বাসের পেছনে কারণও আছে। এর আগে বাংলাদেশ ২৪ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারতের। জয়ের মুখ দেখেছে তিনবার। কিন্তু পরিসংখ্যান সবসময় সঠিক তথ্য দেয় না। এই পর্যন্ত যে তিন ম্যাচে ভারতকে হারিয়েছে তার মধ্যে দুইবারই বড় মঞ্চে। ২০০৭ সালে হাবিবুল বাশারের দল বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দিয়েছিল সেই সময়ের হট ফেভারিট রাহুল দ্রাবিড়ের ভারতকে। এরপর ২০১২ সালের এশিয়া কাপে ধোনির দলকে একই অভিজ্ঞতায় মুখোমুখি হতে হয়। তবে বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে প্রথম সাফল্য পায় সৌরভ গাঙ্গুলির ভারতকে হারিয়ে। সেই বিচারে সবসময় শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে অভ্যস্ত বাংলদেশ।
বাংলাদেশের জন্যে সুখবর হলো মাশরাফি সুস্থ হয়ে উঠছেন। যে তিনবার ভারতের বিপক্ষে জয় পেয়েছে টিম বাংলাদেশ তার মধ্যে দুইবারই জয়ের নায়ক মাশরাফি।
ভিরাট কোহলির ভারতও খুব একটা স্বস্তিতে নেই। ধোনির পরিবর্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কোহলি। পরাজয়ের গোলক ধাধায় ঘুরপাক খাচ্ছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নিউজিল্যান্ড সফরের তিক্ত অভিজ্ঞতা এখনও তরতাজা। শেষ ৮টি ওয়ানডের মধ্যে হেরেছে ৬টিতে। কোহলির দলে সেই হিসেবে বড় কোন নাম নেই। অভিজ্ঞতার বিচারে এগিয়ে আছেন অধিনায়ক কোহলি এবং ধোনির জায়গায় ডাক পাওয়া দীনেশ কার্তিক।
ভারতের বোলিং নিয়ে আক্ষেপটা থাকছে এবারো। মোহাম্মদ সামী, ভরুন এ্যারন, ভুবনেশ্বর কুমারকে নিয়ে ভারতের পেস অ্যাটাক। অন্যদিকে রবীন্দ্র জাদেজা এবং অশ্বিনের উপর থাকছে স্পিনে বোলিংয়ের দায়িত্ব। ভারত যদি দুই পেসার খেলায় তাহলে রজার বিনির ছেলে স্টুয়ার্ট বিনিও অল রাউন্ডার হিসেবে দলে ঢুকে যেতে পারেন।
ভারতের বোলিং লাইন আপ দেখে মনে হতেই পারে শামসুর, মুমিনুল, মুশফিক, নাসির নিজেদের মেলে ধরতে পারলে আবারো উৎসবে মাতবে পুরো বাংলাদেশ।
এখন পুরো বাংলাদেশের চাওয়া বুধবার রাতে ফতুল্লায় ফিরে আসুক মিরপুরের স্মৃতি।
ঢাকা জার্নাল, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৪।