লেবানন মাতালেন ইউনূসকন্যা

আগস্ট ৬, ২০১৩

Monika+yunus+2ঢাকা জার্নাল: ‘সর্বোৎকৃষ্ট হীরকের মতো দ্যুতি ছড়ানো কণ্ঠ’ যার, সুরের মূর্ছনায় বৈরুত শহর মাতালেন সেই সুকণ্ঠী অপেরা শিল্পী মনিকা ইউনূস।
গত বুধবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতের অদূরে জোক মাইকেল আন্তর্জাতিক উৎসবের দর্শক-শ্রোতারা মোহিত হন ইউনূসকন্যার জাদুকরী কণ্ঠে।

কনসার্ট, আবৃত্তি অথবা অপেরা মঞ্চ- যে কেনো ধরণের পরিবেশনে দর্শক রোমাঞ্চিত করা মনিকা যখন মঞ্চে প্রবেশ করেন, তখন তার পরনে ছিলো হীরকখচিত উজ্জ্বল গোলাপী পোশাক।

মঞ্চে উঠে সঙ্গীত পরিবেশন শুরুর মুহূর্তেই দর্শকরা বিপুল করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান। মনিকা প্রথমেই পরিবেশন করেন নেট কিং কোলের ‘এমব্রেসেবেল ইউ’।

জোক মাইকেলের রোমান অ্যাম্ফিথিয়েটারে দুই ঘণ্টার অসাধারণ ওই কনসার্টের দর্শকরা জ্যাজ ও অপেরা সঙ্গীতের এক অনবদ্য প্রেম প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছিলেন।

এতে মনিকা ছাড়াও প্রতিভাধর জ্যাজ সঙ্গীত শিল্পী জোনাথন বাতিস্ত ও তার ব্যান্ড স্টে হিউম্যানও সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই দর্শকসারির মাঝখান থেকে ভেসে আসা সুরের মধ্যে শোনা যায় পিয়ানো ও হারমোনিকার সংমিশ্রণে সৃষ্ট বাতিস্তের সুমধুর যন্ত্রসঙ্গীতের প্রথম স্বরলিপি।

পরিবেশনের পুরো সময়জুড়ে একটি সত্যিকার দলগত কাজের প্রাণের স্পন্দন টের পেয়েছে দর্শকরা। যন্ত্রশিল্পী ও কণ্ঠশিল্পীরা একে অপরের দিকে হাস্যোজ্জল মুখে তাকিয়ে ছিলেন এবং খুব মনযোগের সঙ্গে শুনছিলেন।

পরিবেশনের বিভিন্ন পর্যায়ে শিল্পীরা মঞ্চ থেকে নিচে নেমে এসে জনতার কাছে, দর্শকদের সঙ্গে মিলিত হচ্ছিলেন। মনিকাও একসময় সময় দর্শকসারিতে নেমে এসে সবার সঙ্গে যোগ দিলে পুরো অ্যাম্ফিথিয়েটারই মঞ্চে রূপান্তরিত হয়ে যায়।

নেট কিং কোলের আরেকটি জনপ্রিয় ট্র্যাক ‘লাভ’ অত্যন্ত চমৎকারভাবে পরিবেশন করেন মনিকা। এরপর ডরিস ডে’র ‘ইউ আর মাই সানসাইন’ পরিবেশন শুরু করলে দর্শক-শ্রোতা সবাই একযোগে গলা মেলান তার সঙ্গে।

পুরো দুঘণ্টা জুড়ে অ্যাম্ফিথিয়েটারটি যেন ক্ষুদ্র জ্যাজ জগতে পরিণত হয়, যেখানে মনিকার কণ্ঠ ছড়িয়ে দেয় মধুর ও আনন্দদায়ক সুর। এ অনুষ্ঠান না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন যে জ্যাজ এবং অপেরার এরকম চমৎকার ঐকতান সম্ভব।

নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের মেয়ে মনিকার জন্ম ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রামে হলেও তার বেড়ে ওঠা মা ভেরা ফরোসতেনকোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে।
১৩ বছর বয়সে মনিকা ম্যাসাচুসেটসের প্রখ্যাত ট্যাঙ্গেলউড মিউজিক সেন্টারে ভর্তি হন। সেখানেই তিনি পেশাদার অপেরা শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৯৭ সালে প্রখ্যাত লরেন্সভিল স্কুলে ভর্তি হবার পর তিনি জুলিয়ার্ড স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকেই তিনি ভোকাল পারফরমেন্সে স্নাতক ডিগ্রি নেন।

ছোট বেলা থেকে বাবাকে না দেখলেও মনিকা ২০০৪ সালে ইউনূসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ২০০৫ সালে বাবার সঙ্গে দেখা করতে তিনি বাংলাদেশে আসেন।

মনিকা আরেক অপেরা শিল্পী ব্রান্ডন রেনল্ডসকে বিয়ে করেছেন।

ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ৫, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.