শতবর্ষী সাবজান ও গাজীপুরের ভোট

জুলাই ৭, ২০১৩

sabjan-dadi-photo-11ঢাকা জার্নাল: কোনাবাড়ির দেওলিয়াবাড়ির শতবর্ষী এই বৃদ্ধা স্বামী আব্দুল জলিলের মৃত্যুর প্রায় একযুগ পর এসেছেন ভোট দিতে। ছেলের বৌ ও নাতি-নাতনিদের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে এসে পৌঁছান সকালেই। কোনাবাড়ি ডিগ্রী কলেজের মহিলা বুথে সকাল সোয়া নয়টায় তিনি ভোট দেন পছন্দের প্রার্থীকে।

ভোটকেন্দ্র পর্যন্ত তাকে রিক্সায় করে আনা হলেও বিশাল স্কুল মাঠ হেঁটেই পার হয়ে বুথে পৌঁছান শতবর্ষী এই বৃদ্ধা। ভোট দিয়ে কেন্দ্রের বারান্দায় বসেছেন একটু জিরিয়ে নিতে। নাতনির ভোট দেওয়া শেষ হলে তার সঙ্গে বেরিয়ে আসবেন বুথ থেকে।

এ সময়ই বুথের বারান্দায় তার সঙ্গে কথা হয়। ছবি তুলতে চাইলে প্রথমে একটু ইতস্তত করলেও পরে আনন্দের সাথেই রাজি হন।

সাবজান বেওয়া বলেন, ‘বুড়া থাকতে ভোট দিছি। আর ভোট দেইনি।’গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (জিসিসি) নির্বাচনে ভোট দিতে আসা শতবর্ষী সাবজান বেওয়া এভাবেই জানালেন নিজের প্রতিক্রিয়া। বয়সের ভারে শরীর না চললেও ভোট দিতে আসায় কোন ক্লান্তি ধরা পড়েনি তার চোখেমুখে।

sabjan-dadi-photo-9সাবজান বেওয়া জানান, স্বামী আব্দুল জলিল মারা গেছেন প্রায় একযুগ আগে। সর্বশেষ তিনি বেঁচে থাকতে ভোট দিয়েছিলেন। এরপর আর ভোট দেননি। নাতনি আসমা আর ছেলের বৌ তাকে নিয়ে এসেছেন ভোট কেন্দ্রে। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা জানালেও কাকে ভোট দিয়েছেন সে রহস্য ফাঁক করেননি তিনি।

জানালেন, ভোট দিতে কোন সমস্যা হয়নি। সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে পেরে তিনি আনন্দিত। নাতনি ভোট দিয়ে বের হলে তিনি চলে যাবেন বাড়িতে।

কথা হয় নাতনি আসমার সঙ্গে। চাঁদপুরে বিয়ে হলেও এখানকার ভোটার তিনি। ভোট দিতে এসেছেন সেই চাঁদপুর থেকে। আসমা অনায়াসেই জানালেন তার পছন্দের প্রার্থীর নাম। তবে নামটি লিখতে নিষেধ করেন তিনি।

ভোট দেওয়া শেষে শতবর্ষী সাবজান যখন কলেজ মাঠের মধ্য দিয়ে নাতনির হাত ধরে ফিরতে থাকেন, তখন অনেকের দৃষ্টি থাকে সেদিকে।

জিসিসির নির্বাচনী এলাকার সবচেয়ে পশ্চিমের এলাকা কোনাবাড়ির দেওলিয়াবাড়ি। জিসিসি ৯ নং ওয়ার্ডের আওয়াতধীন এই এলাকায় একই ক্যাম্পাসে কোনাবাড়ি ডিগ্রী কলেজ, দেওলিয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় এবং দেওলিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্র।

sabjan-dadi-photo-13শনিবার সকাল থেকে বেলা সাড়ে বারোটা পর্যন্ত তিনটি কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলেছে। কোনো কেন্দ্রেই ইভিএম (ইলেক্ট্রনিক্স ভোটিং মেশিন) পদ্ধতির ব্যবহার নেই। এখানে মোট ভোটার ১০ হাজার ২৪৮ জন। তাদের মধ্যে মহিলা ভোটার ৫ হাজার ১২০ জন। কেন্দ্রের কর্তব্যরত প্রিজাইডিং অফিসার আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট গ্রহণ চলছে।

উল্লেখ্য, গাজীপুর ও টঙ্গী পৌরসভা এবং আশপাশের মোট ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকা। মোট ভোটার সংখ্যা ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৯ জন ও ভোটকেন্দ্র ৩৯২টি। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১১ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে মোতায়েন রাখা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ঢাকা জার্নাল, জুলাই ০৬, ২০১৩।
সূত্র বাংলা নিউজ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.