‘আবারো সংলাপের প্রস্তাব’

মে ১২, ২০১৩

Hasina_Khaledaঢাকা জার্নাল: নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলকে আবারো সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঘরোয়া এক সমাবেশে শেখ হাসিনা এই আহ্বান জানান৷ জবাবে বিএনপি বরাবরের মত সংলাপের বিষয়বস্তু স্পষ্ট করার কথা বলেছে৷

এদিকে, বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘের সহকারি মহাসচিবকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারকে চাপ দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি৷

বিএনপিকে এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের আহ্বানের পরই চিঠি দেয়ার কথা বলেছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম৷ কিন্তু এর পরপরই খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন৷ সেই সময়ও শেষ হয়ে গেছে৷ আর এরমধ্যে গত ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধের পর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশ এবং অবস্থানকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে ঘটে গেছে তুলকালাম কাণ্ড৷

সরকার দাবি করছে খালেদা জিয়া যে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন তার সঙ্গে হেফাজতের অবস্থানের সম্পর্ক আছে৷ এর মাধ্যমে নাকি তারা সরকার পতনের ষড়যন্ত্র করেছিল! তাই হেফাজতকে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মাধ্যমে শাপলা চত্বর থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে৷ আর বিএনপি’র দাবি শাপলা চত্বরে রাতের আধারে ‘গণহত্যা’ চালানো হয়েছে৷

এই অবস্থায় বিএনপি সোমবার ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে৷

আর এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার আবারো বিরোধী দলকে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি ঢাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক ঘরোয়া সমাবেশে বলেছেন, “সংলাপের আহ্বান অব্যাহত আছে৷” তাই ধ্বংসাত্মক পথ পরিহার করে বিরোধী দলকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী৷

এর জবাবে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শাসসুজ্জামান দুদু বলেন, “বিএনপি সংলাপের পক্ষে, বিরুদ্ধে নয়৷ তবে আগে সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে৷ বিষয়বস্তু স্পষ্ট করতে হবে৷”

তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাদের কারাগারে রেখে, নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে সংলাপ হয়না৷”

এদিকে ঢাকা সফররত জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারি মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷ বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ হয়৷ সেখানে সরকারকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাপ দিতে সহকারি মহাসচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে৷

আর এইসব বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার বলেন, “ যে যাই বলুন না কেন সামনের নির্বাচন সুষ্ঠু এবং সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে সংলাপ লাগবেই৷ বিরোধী দলকে যেমন তার দাবি নিয়ে গো ধরে থাকলে চলবেনা৷ তেমনি সরকারি দলকে সংলাপের আহ্বানের নামে কূটকৌশলের আশ্রয় নিলে চলবে না৷ মূল কথা হলো নির্বাচন যে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে তা কাজে প্রমাণ করতে হবে সরকারকে৷ আর সরকার যদি সত্যিই সেই উদ্যোগ নেয় তাহলে বিরোধী দলকেও ছাড় দিতে হবে, পদ্ধতি যা-ই হোক না কেন ”

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.