আটক জঙ্গিরা ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’র সদস্য

আগস্ট ১২, ২০২৩

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। এর মধ্যে পুরুষ চার ও নারী ছয় জন। এই আস্তানাটি ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’ নামের নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনের। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন হিল সাইড’।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, আটক নারী-পুরুষরা ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’ নামক জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। বাংলাদেশে সংগঠনটি নতুন কার্যক্রম শুরু করেছে।

এর আগে, রাত সাড়ে ৮টা থেকে উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা টাট্টিউলি গ্রামের বাইশালীবাড়ি এলাকার ওই বাড়িটি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখে সিটিটিসি। শনিবার (১২ আগস্ট) সকাল ৭টায় ওই বাড়িতে অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলার সংস্থাটি।

জেলা পুলিশ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযানে কোনও হতাহতের ঘটনা ছাড়াই চার পুরুষ ও ছয় নারী জঙ্গিকে আটক করা হয়। তাদের সঙ্গে তিন শিশু রয়েছে। অভিযানে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সার্বিক সহায়তা প্রদান করছে। সেখান থেকে ২.৫ কেজি বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, কমান্ডো বুটসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি, ছুরি-রামদাসহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র এবং নগদ তিন লাখ ৬১ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানটি শেষ হয়েছে।

আটক অভিযুক্তরা হলেন- সাতক্ষীরার তালার উপজেলার নলতা গ্রামের ওমর আলীর ছেলে শরীফুল ইসলাম (৪০), তার স্ত্রী আমিনা বেগম (৪০), তাদের মেয়ে হাবিবা বিনতে শফিকুল (২০), কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার কালনার আবুল কাশেমের ছেলে হাফিজ উল্লাহ (২৫), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা এলাকার রসুলপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে খায়রুল ইসলাম (২২), তার স্ত্রী মেঘনা (১৮), সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার মাইজবাড়ী গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে রাফিউল ইসলাম (২২), পাবনার আটঘরিয়ার শ্রীপুর গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের স্ত্রী শাপলা বেগম (২২), নাটোরের চাঁদপুর গ্রামের সোহেল তানজীম রানার স্ত্রী মাইশা ইসলাম (২০) ও বগুড়ার সারিয়াকান্দির নিজবলাই গ্রামের সুমন মিয়ার স্ত্রী সানজিদা খাতুন (১৮)। তাদের সঙ্গে তিন শিশু রয়েছে। তাদের বয়স ছয় বছরের নিচে।

জেলা পুলিশ সুপার মনজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। সঙ্গে তিন শিশু রয়েছে। তবে প্রেস ব্রিফিং করে আরও বিস্তারিত জানানো হবে।

সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, জঙ্গি আস্তানা গড়তে কুলাউড়া পাহাড়ে ৫০ শতাংশ জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করে তারা বসবাস করছিল। আরও অনেকে এই আস্তানায় ছিল বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। আমরা সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবো। এখান থেকে ১০ জনকে আটক করেছি। সঙ্গে তিন শিশু রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ হতো। আমরা এখান থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করেছি। পাওয়া গেছে প্রশিক্ষণ ও জিহাদি বই। আগে আটকদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, এই জঙ্গি সংগঠনের নাম ইমাম মাহমুদের কাফেলা।’