নির্বাচন প্রতিহত করার অধিকার কারও নাই: তথ্যমন্ত্রী

জুলাই ২৪, ২০২৩

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কেউ যদি নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়, সেটি নির্বাচনি পরিবেশ নষ্ট করার শামিল। নির্বাচন যে কেউ বর্জন করতে পারে, কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার অধিকার কারও নেই।

 

সোমবার (২৪ জুলাই) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ সচিবালয় রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) নবনির্বাচিত নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও পরিচিতি সভা হয় আজ। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরও দেন।

সরকার ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করে বিরোধী দলকে দমনের চেষ্টা করছে—মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুলকে অনুরোধ জানাবো পেছনে ফিরে তাকানোর জন্য। ওনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন ৫০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন। এখন বাংলাদেশে ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এখন গ্রামের গৃহবধূ, স্কুলের শিক্ষার্থী, রিকশাওয়ালা, ক্ষেতে কাজ করা ব্যক্তিও ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এই ইন্টারনেটকে সর্বজনীন করেছে বর্তমান সরকার।

মন্ত্রী বলেন, যারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসে সরকারের বিরুদ্ধে, সরকারের মন্ত্রীদের-সরকারি দলের নেতাদের চরিত্র হনন করে তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করে তারেক রহমান। সেই বৈঠকের ছবিও আমাদের কাছে আছে। এটা কেবল ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার কারণে করতে পারছে, যা কখনও সমীচীন না। এগুলো ডিজিটাল অপরাধ। ডিজিটাল অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সারা পৃথিবীতে আইন আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্প্রতি একটি আইন পাস করেছে। সেখানে অনেক দেশ সায় দিয়ে আইন পাস করেছে।

তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডিজিটাল অপরাধীদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য কাল সংবাদ সম্মেলন করছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উচিত সরকারকে ধন্যবাদ জানানো। কারণ, তিনি ভিডিও কনফারেন্সে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে মিটিং করেন। সেটা শেখ হাসিনার জন্য হয়েছে। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানানো দরকার।

বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে তারা বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা চাই বিএনপি পূর্ণশক্তি নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। ২০১৮ সালের মতো নয়, বরং পূর্ণশক্তি নিয়ে অংশ নিক। একদিকে তারা বলছেন নির্বাচনে যাবেন না। আবার বলছেন আমাদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছে। আমরা কাউকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছি না। আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে আসুক এবং সংবিধান মেনে যে নির্বাচন হবে সেখানে অংশ নিক।

মন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের মধ্যেই স্পষ্ট তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চান, কিন্তু কোনও অদৃশ্য শক্তির কারণে নির্বাচনে আসতে পারছেন না। তাদের নেতৃত্ব কোনও অদৃশ্য শক্তির কারণে নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। এটি মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেবের বক্তব্যে স্পষ্ট। আমি তাদের অনুরোধ জানাই, অদৃশ্য থাবা থেকে মুক্ত হয়ে বিএনপি দলটাকে জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচন কত সুষ্ঠু হয়েছে। একটা ঘুসিকে নিয়ে যেভাবে গণমাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে! পশ্চিম বাংলায় যে ৩৯ জন মারা গেছে, আর এখানে একটা ঘুসি মেরেছে। তাহলে পরিবেশ কোথায় ভালো? ঢাকা-১৭-এর নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। কেন্দ্রের বাইরে একজন প্রার্থীকে হেনস্তা করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। আমরা সেটার নিন্দাও জানিয়েছি। সেখানে আট জন গ্রেফতারও হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, এখানে নির্বাচন পরিস্থিতি ভালো। নির্বাচনের পরিবেশ কেউ নষ্ট করছে কিনা সেটা এখন দেখার বিষয়।