শিক্ষামন্ত্রীর ৫৭তম জন্মদিনে শিক্ষা পরিবারের শুভেচ্ছা

ডিসেম্বর ৮, ২০২১

 

বাংলাদেশের প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ৫৭তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শিক্ষা পরিবারের সদস্যরা।

আজ বুধবার (৮ ডিসেম্বর) শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা, সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা তাকে শুভেচ্ছা জানান।

উল্লেখ্য, ডা. দীপু মনি বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও সফলাতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ১৯৬৫ সালের ৮ ডিসেম্বর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি চাঁদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। আজ বুধবার তার ৬৫তম জন্মবার্ষিকী এবং ৫৭তম জন্মদিন। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদের একমাত্র কন্যা শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের জানান, জন্মদিনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি তার জন্মস্থান চাঁদপুরে রয়েছেন। স্থানীয় নেতাকর্মী ও শিক্ষকরা তার জন্মদিনে সকাল থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তার জন্মদিনে শিক্ষা পরিবারের পক্ষ থেকে সকাল থেকে শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী তার জন্মদিনে ঢাকায় না থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষকরা ব্যক্তিগতভাবে এবং সাংগাঠনিকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শিক্ষকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরছেন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে।

ডা. দীপু মনি দেশের প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী। সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। মানবাধিকার বিষয়ক সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের সভাপতি ছিলেন, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত।

ডা. দীপু মনি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চার জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং চারজন দলীয় মুখপাত্রের মধ্যে তিনি অন্যতম। একাদশ জাতীয় সংসদে ডা. দীপু মনি চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর- হাইমচর) এর প্রতিনিধিত্ব করছেন।

নারীর অধিকার, স্বাস্থ্য আইন, স্বাস্থ্য-নীতি ও ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য অর্থায়ন, কৌশলগত পরিকল্পনা, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি ছিল মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে ডা. দীপু মনির প্রাগ্রাধিকার ক্ষেত্র।

দীপু মনি লেখালেখি, শিক্ষকতা, পরামর্শ দেওয়া, গবেষণা, অ্যাডভোকেসি কর্মসূচি পরিচালনা ইত্যাদি নানা কাজের পাশাপাশি দুস্থ ও চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত মানুষের সেবায় ফ্রি ফ্লাইডে ক্লিনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন দীর্ঘদিন।

ডা. দীপু মনি প্রতিনিধিত্বমূলক রাজনীতি এবং নীতি নির্ধারণ মূলক প্রক্রিয়ায় নারীদের সম্পৃক্ততায় একনিষ্ঠভাবে কার করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের সার্বিক সহযোগিতায় তিনি দলীয় নারী কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। এ প্রশিক্ষণে তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের দু’জন মাস্টার ট্রেইনারের অন্যতম।

ডা. দীপু মনি দেশের সেরা চিকিৎসা বিদ্যাপীঠ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পাবলিক হেলথ থেকে এমপিএইচ ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমঝোতা ও দ্বন্দ্ব নিরসন (Negotiation and Conflict Resolution) এর ওপর একটি কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।

ডা. দীপু মনির নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমুদ্র জয় করে। এসময়ে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে প্রায় চার দশকের সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তির নেওয়া নেন এবং সফল হয় বাংলাদেশ।

ডা. দীপু মনির নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লিবিয়ায় আটকে পড়া ৩৭ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিকদের লিবিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এছাড়াও সোমালীয় জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া জাহাজের নাবিকসহ ২৫জন নাগরিককে জাহাজসহ নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আফগানিস্তানে তালেবানদের হাতে আটক হওয়া ৭জন শ্রমিককে দেশে ফিরিয়ে আনার নেতৃত্বে সফল হয় সরকার।

ডা. দীপু মনির নিরলস প্রচেষ্টার ফলে সৌদি আরবে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকা ইকামা পরিবর্তনের সুযোগ পুনরায় চালু হয়। ফলে প্রায় ৮ ললাখ বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদি আরবে বৈধতা অর্জন করে। এছাড়া এসময়ে মালয়েশিয়ায় ২ লাখ ৬৮ হাজার বাংলাদেশি অবৈধ শ্রমিককে বৈধ করা সম্ভব হয়।

ডা. দীপু মনি Commonwealth Ministerial Action Group (CMAG) এর প্রথম মহিলা এবং প্রথম দক্ষিণ এশিয় চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন। কমনওয়েলথ -এর নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা রিভিউয়ের ক্ষেত্রেও তিনি বিশেষজ্ঞ হিসেবে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন।