রাষ্ট্রীয় সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশ নেবে না সাদপন্থী কওমি মাদ্রাসাগুলো

ডিসেম্বর ৪, ২০২১

সরকারিভাবে স্বীকৃত কওমি মাদ্রাসার সম্মিলিত শিক্ষা সংস্থা ‘আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’র অধীনে পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাবলিগে মাওলানা সাদপন্থী মাদ্রাসাগুলো। এখন থেকে স্বতন্ত্রভাবে নিজেরা দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষার আয়োজন করবে সাদ অনুসারী মাদ্রাসাগুলোর সংস্থা ‘জাতীয় কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড, বাংলাদেশ’।

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বোর্ডের মহাসচিব ও জামিয়া আল হাসনাইনের মহাপরিচালক মুফতি সৈয়দ উসামা ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জাতীয় কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড চলতি বছর থেকে দাওরায়ে হাদিসসহ সব মৌলিক ক্লাসের পরীক্ষা নেবে। স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয়তা সংরক্ষণে এ বোর্ডে নিবন্ধনকৃত কোনো মাদ্রাসা যদি অন্য কোনো বোর্ডের পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাহলে তাদের নিবন্ধন বাতিল বলে গণ্য হবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘জাতীয় কওমি সিলেবাস’ নামে নিজস্ব সিলেবাস ও কারিকুলাম প্রণয়ন এবং স্বতন্ত্র পাঠ্যবই রচনার মাধ্যমে ধর্মীয়, জাগতিক (জাতীয় ও কারিগরি) শিক্ষার সমন্বয়ে একটি যুগোপযোগী শিক্ষাধারা চালু করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে এ বোর্ডের সব মাদ্রাসায় এ শিক্ষা কার্যক্রম বাধ্যতামূলক করা হবে।

২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি শিক্ষা সনদের মান ঘোষণা করার পর হাইআতুল উলইয়ার অধীনে ৬ বোর্ডের সম্মিলিত দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়।

২০১৮ সালে জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশনে ‘কওমি মাদরাসাগুলোর দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল)-এর সনদকে আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’-এর অধীনে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান প্রদান বিল-২০১৮’ পাস হয়।

একই বছর তাবলিগ জামাতের বিভাজনকে কেন্দ্র করে তাবলিগের কেন্দ্রীয় আমির মাওলানা সাদ অনুসারী মাদ্রাসাগুলোর পরীক্ষা স্থগিত করে ‘আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’।

হাইয়ার এ সিদ্ধান্তে দেশের কয়েকটি মাদ্রাসার প্রায় ১৭৭ জন দাওরা হাদিস শিক্ষার্থীর পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। পরে বেফাক ও হাইয়াতুল উলইয়া থেকে শিক্ষার্থীদের যথাসময়ে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন মাওলানা সাদ অনুসারী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।

রিটের শুনানিতে বিচারপতি এফ.আর.এম. নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে.এম. কামরুল কাদেরের দ্বৈত বেঞ্চ সাদ অনুসারী মাদ্রাসাগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারবে বলে নির্দেশ দেন।

কিন্তু বেফাক ও হাইআতুল উলয়া হাইকোর্টের রায়ের কারণে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিলেও তাদের নিবন্ধনপত্রে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার নাম উল্লেখ করেনি। ফলে আলাদা বোর্ড গঠন করে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এই মাদ্রাসাগুলো। পরে তাদের সঙ্গে আরও চার শতাধিক কওমি মাদ্রাসা যুক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।