‘কিশোর গ্যাং’ কালচার বন্ধে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক চর্চায় যুক্ত করার উদ্যোগ

আগস্ট ৫, ২০২১

কিশোর গ্যাং কালচারে শিক্ষার্থীরা যাতে জড়িয়ে না পড়ে সে লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও খেলাধুলায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনলাইনে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজনের ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খানবলেন, ‘কিশোর অপরাধ একটি সামাজিক ব্যাধি। এই ব্যাধি নির্মূলে প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন। অভিভাবক, শিক্ষক, সুশীল সমাজ ও মিডিয়ার সমন্বয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে অনলাইনে অভিভাবক সম্মেলন আয়োজন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনলাইনে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির অনুকূলে এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

গত কয়েক বছর ধরে রাজধানীসহ সারাদেশে কিশোর অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে গত ৩০ জুন কিশোর অপরাধ নির্মূলের ব্যবস্থা নিতে বেশ কিছু সুপারিশ করে। আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ বাস্তবায়নের অনুরোধ জানায়। শিক্ষকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সচেতন করার কথাও বলা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সুপারিশের ভিত্তিতে গত ২৭ জুলাই বৈঠক করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। ওই বৈঠকে সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেয়। গত রবিবার (১ আগস্ট) কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়।

সিদ্ধান্তে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু হলে অ্যাসেম্বলিতে মাদকের কুফল নিয়ে আলোচনা করতে হবে। অভিভাবকদের মধ্যে মাদকের কুফল সম্পর্কে অনলাইনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। করোনাকালে এ বিষয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নিয়ে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের মাদকের কুফল নিয়ে অনলাইনে সভার আয়োজন করতে হবে। সভায় অধিদফতরের কর্মকর্তাদের যোগদান করবে।

জিপিএ-৫ পাওয়ার প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত না রেখে খেলাধুলা, নাটক, সংগীত, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন অলিম্পিয়াড, স্কাউটিং, গার্লস গাইডের মতো সুস্থ বিনোদনমূলক এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিস –এ শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। করোনাকালে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে।

করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসের বাইরে শিক্ষার্থীদের অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক অনলাইন প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে হবে। প্রশিক্ষণের লব্ধ জ্ঞান প্রয়োগের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কিত প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে হবে। অনলাইন ক্লাস সংখ্যা বাড়াতে হবে। মনিটরিং জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থা কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।