অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ও করোনা-পরবর্তী সেমিস্টারের বেতন ফি মওকুফের দাবি

জুন ১৮, ২০২০

অনলাইনে নেওয়া ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ও করোনাপরবর্তী সেমিস্টার ফিস মওকুফের দাবি জানিয়েছে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিটি। বৃহস্পতিবার ১৮ জুন শিক্ষামন্ত্রী ও ইউজিসি’র চেয়ারম্যান বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে এই দাবি জানানো হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও ভয়াবহভাবে করোনা মহামারীতে আক্রান্ত। দিনের-পর-দিন পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। সারাদেশের মানুষ যে অসহায় পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন, এ থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবারগুলোও মুক্ত নয়।  প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এখন মূলত নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা বড় অংশের শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পরিবারগুলোর আর্থিক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। সরকার আবার দেশে ৫০টি রেড জোন ঘোষিত জেলা লকডাউন করার ঘোষণা দিয়েছে।

এমতাবস্থায় যদি নতুন সেমিস্টার চালু করে অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষা ও বেতন ফি আদায় করা হয়, তাহলে এই পরিবারগুলো আর্থিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।

স্মারকলিপিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সুবিধার যে বাস্তবতা তার ওপর নির্ভর করে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়। আবার এই অনলাইন কার্যক্রমে কোনও শিক্ষার্থীকে অংশ নিতে যে নেট বিল গুণতে হবে, তা এই পরিস্থিতিতে অনেক শিক্ষার্থীই যোগান দিতে পারবে না।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও সারাদেশের শিক্ষানুরাগী জনগণকে হতাশ করে গত তিন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাসের নামে তাদের শিক্ষাব্যবসা আরও প্রসারিত করেছে। অমানবিকভাবে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করেছে বেতন ফি প্রদান করতে। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসি অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষা অনুমোদন করে ও শিক্ষা ব্যবসাকে বৈধতা দিল।

মাত্র ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী এ অনলাইন কার্যক্রমে অংশ নিলেও আমরা লক্ষ্য করলাম একটা অ্যাসাইনমেন্টের মধ্য দিয়ে স্প্রিং সেমিস্টার থেকে শিক্ষার্থীদেরকে সামার সেমিস্টারে উত্তীর্ণ করা হলো। একজন শিক্ষার্থী তার বিষয় সম্পর্কে কোনও সাধারণ ধারণাটুকুও পেল না, অথচ সেই বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়ে গেল। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলো দু’ভাবে। একদিকে সে তার বিষয় সম্পর্কে কিছু জানলোই না, অন্যদিকে তার কাছ থেকে ক্লাস-পরীক্ষার নামে আদায় করা হলো অর্থ।

এরই ধারাবাহিকতায় এখন আবার অনলাইনে সামার সেমিস্টার শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। কিছু প্রতিষ্ঠান সামার সেমিস্টারের কার্যক্রম ইতোমধ্যে চালু করে দিয়েছে । প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি তাদের এই ব্যবসায়িক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারে এবং ইউজিসি যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নেন, তাহলে গোটা উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা একটা বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

দাবি

১। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পূর্বে নতুন সেমিস্টার চালু করা যাবে না।

২। করোনা-পরবর্তী নতুন সেমিস্টারের টিউশন ফি সম্পূর্ণরূপে মওকুফ করতে হবে।

৩। অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করতে হবে।

৪। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নিশ্চিত কর।