খেটে খাওয়া সংবাদকর্মীদের নিয়ে ধান্দা করবেন না

এপ্রিল ২০, ২০২০

এই মহামারীকালে আম ছালা, বস্তা, খেতা নামে যারা গণমাধ্যম চালান এবং সাংবাদিকদের বেতনভাতা না দিয়ে চালাকি করেন, হেনতেন করে বেড়ান, তারা আবার জড়ো হচ্ছেন করোনাকালের টাকার বড় ভাগটা নেওয়ার জন্য। তাই পেশার পেশার মুরুব্বীদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাই খেটে খাওয়া সংবাদকর্মীদের নিয়ে ধান্দা করবেন না।

করোনা সংকটে বিভিন্ন পেশার মানুষের মতো দুঃসময় তৈরি হয়েছে গণমাধ্যমেও। কোনো গণমাধ্যম বন্ধ হচ্ছে, কোনও গণমাধ্যমে কর্মী ছাঁটাই চলছে। যদিও এই অবস্থা চলে সারা বছরই। কিন্তু সময়মতো বেতন না পাওয়া, বেতন আটকে যাওয়া, বেকারত্ব বেড়ে যাওয়ার ঘটনা করোনা সংকটে প্রকট হয়ে উঠেছে। যদিও এই সংকটে অনেক গণমাধ্যমই আবার ঠিকমত বেতন-ভাতাও দিচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে উন্নত দেশগুলো হিমসিম খাচ্ছে। বাংলাদেশেও এই করোনাভাইরাস আঘাত হানার পর সরকারি অফিস-আদালত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকার সাধারণ মানুষকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার অনুরোধ করেছে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।

দেশে দীর্ঘ ছুটি ও লকডাউনের কারণে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলো পড়েছে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে। বিভিন্ন পেশাজীবীদের মধ্যেই অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। আর সে কারণে সরকার বিভিন্ন সেক্টরের জন্য প্রণোদনা দেওয়ারও ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রণোদনার এই তালিকায় সংবাদকর্মীদের বিষয়টি সরকার প্রধানের মাথায় রয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা ভিত্তিক গণমাধ্যম কর্মীদের তালিকা করে তাদের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় নিতে জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল।

এমন একটা সময়ে সরকারের কাছে প্রণোদনার আশা করছে গণমাধ্যমগুলো।  তবে সরকার যদি প্রণোদনা দেয়, আমরা যদি তা নিতে পারি তাহলে আমাদের এ বিষয়ে সবচেয়ে স্বচ্ছতা দেখাতে হবে। যৌক্তিকভাবে যারা প্রণোদনা পাওয়ার যোগ্য তারাই যেন প্রণোদনা পায় সে ব্যবস্থা নিতে হবে।  তাই এই মহামারীকালে আম ছালা, বস্তা, খেতা নামে যারা গণমাধ্যম চালান এবং সাংবাদিকদের বেতনভাতা না দিয়ে চালাকি করেন, হেনতেন করে বেড়ান, তারা আবার জড়ো হচ্ছেন করোনাকালের টাকার বড় ভাগটা নেওয়ার জন্য। তাই পেশার পেশার মুরুব্বীদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাই খেটে খাওয়া সংবাদকর্মীদের নিয়ে ধান্দা করবেন না।

প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়ে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। তা হচ্ছে— সাংবাদিকদের ডাটাবেজ করে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। সংবাদকর্মীদের জন্য বেতন বা প্রণোদনার টাকা অবশ্যই সাংবাদিকদের ব্যাংক একাউন্টে দিতে হবে। কোনো গোষ্ঠীর মাধ্যমে নয়, প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকৃত অবস্থা জেনেই এখানে সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। আর সেই সব মালিকদেরই ঋণ পাওয়া উচিত যারা বেতনভাতা নিয়মিত দিচ্ছেন এবং যেখানে সত্যিকার অর্থে পেশাদার সাংবাদিকরা কাজ করেন।

আমি মনে করি এটা নিয়ে নতুন ব্যবসার করার দরকার নেই। যেসব সংবাদপত্র ঘুষ দিয়ে অষ্টম ওয়জবোর্ডডের কার্ড নিয়ে সাংবাদিকদের বেতন ঠিতমত দেন না, তারা যেনো কোনোভাবেই ঋণ সহায়তা না পায়। বরং  এসব গণমাধ্যমে পেশাদার সাংবাদিক থাকলে তাদের একাউন্টে প্রণোদনার অর্থ দিতে হবে, মালিককে নয়।

সরকার প্রধান শুরু থেকেই গণমাধ্যমের বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। সিদ্ধান্তের দোড়গোড়ায় এসে ঘি খাওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকেই।

তাই আমরা আরো জোরালোভাবে বলতে চাই এখানে কোনো একাংশ নয়, সাংবাদিকদের সব অংশ এবং শ্রমিক কর্মচারীদেরও সমভাবে দেখতে হবে।

ওম্মুল ওয়ারা সুইটি, প্রধান প্রতিবেদন দেশ রুপান্তর